সৈয়দা উম্মে কুলসুম রেনু শেরপুরের নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা এবং নকলা উপজেলার কেজাইকাটা গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার দুপুরে জেলার ত্রাণ তহবিলের জন্য এ টাকা শেরপুর জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুবের হাতে তুলে দেন তিনি।
২০০৪ সালের একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এ হামলায় অন্যদের সঙ্গে রেনুও আহত হন। তার মাথা ও পায়ে গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আহত অবস্থায় জীবন ধারণের জন্য পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জন্য ব্যাংকে ২০ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত খুলে দেন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি সেই আমানত থেকে জমানো টাকা থেকে এই দুই লাখ টাকা দান করলেন বলে জানিয়েছেন।
সৈয়দা উম্মে কুলসুম রেনু জানান, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তিনি মাথায় ও দু’পায়ে আঘাত প্রাপ্ত হন। আঘাতের পর তিনি প্রায় ২৫ দিন কোমায় ছিলেন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হলেও দু’দিন পর তাকে গ্রিন রোডের এক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই প্রায় দু’মাস তার চিকিৎসা চলে। এ সময় তার সমস্ত চিকিৎসার খরচ বহন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ওই সময়ে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরো জানান, পরে ‘পঙ্গু অবস্থায়’ তাকে নেওয়া হয় সাভার সিআরপি হাসপাতালে। সেখানে তিনি প্রায় আট মাস ধরে থেরাপি দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
সিআরপি হাসপাতালে থাকার সময়ে তাকে আরও এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দু’দফায় ২০ লাখ টাকার এফডিআর করে দেন। ওই এফডিআরের লভ্যাংশের টাকা কিছু খরচ করেছেন এবং কিছু জমিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এ কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে মানবতার সেবার এগিয়ে এসে তার জমানো দুই লাখ টাকা জেলা প্রশাসকে ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের ব্যথার যন্ত্রণা এখনও অনুভব করি। মাঝে মধ্যে স্প্লিন্টারে ব্যথার যন্ত্রণা শুরু হলে তা শরীরের ছড়িয়ে পড়ে।”
টাকা দান করার সময় রেনু জানান, সংসারে অভাব অনটন থাকার পরও কষ্ট করে তিনি ওই দানের টাকাটা জমিয়েছিলেন ভবিষ্যতের জন্য। বর্তমানে জাতির এ দুঃসময়ে দুই লাখ টাকা দান করতে পেরে মনে আনন্দ ও তৃপ্তি বোধ করছেন তিনি।
দান গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, “এটা নিঃসন্দেহে সুন্দর উদ্যোগ। মানবতার সেবায় এগিয়ে এসে রেনু উত্তম কাজটিই করেছেন।
“দু’দিন আগে চরাঅষ্টধর এলাকায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও রেনু কিছু টাকা দান করেছে।”