বুধবার বিকালে পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম আকাশে কালো মেঘ দেখা দেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির সাথে পড়তে থাকে শিল।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এই ঝড়বৃষ্টিতে ওই দুই উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতি হয়েছে।
“রাণীনগরে প্রায় দুই হাজার হেক্টর এবং আত্রাইয়ে চার শতাধিক হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া শিলে ঘরের টিন ছিদ্র ও ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন।”
এ উপজেলার বড়গাছা, আকনা-বাঁশবাড়িয়া, গিরিগ্রাম, শলা, পানলা, ভাটকৈ, চামটা, আমিরপুর, লক্ষিকোলা, গুয়াতা, উজালপুর জলকৈ, সরিয়াসহ বেশ কিছু এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা, আধা পাকা ধান নষ্ট হয়ে যায়্ বলে তার কাছে খবর রয়েছে।
“আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা শুরু করেছি।”
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, “শিলা বর্ষণে কয়েক এলাকার আনুমানিক প্রায় দেড়-দুই হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে ধারনা করছি।
“তারপরও মাঠ পর্যায়ে মাঠকর্মীরা তালিকার কাজ শুরু করেছে। তালিকা হাতে পেলে ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।”
ভাটকৈ গ্রামের শাহাজান আলী জানান, তিনি প্রায় ২৮ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেন। শিলা বর্ষণে ‘সব ধান ঝরে গেছে।’
“বিঘা প্রতি হয়ত এক/দুই মন করে ধান পেতে পারি।”
চামটার মিলন, গুয়াতা গ্রামের নওশাদ, জলকৈ গ্রামের দুলাল চন্দ্র, আকনা গ্রামের মোসলেম উদ্দীনসহ আরো কয়েকজন কৃষক জানান, পাকা ধান সব নষ্ট হয়ে গেছে। তবে যে দু/চার বিঘা জমির ধান কিছুটা কাঁচা রয়েছে সেসব জমিতে ‘হয়ত কিছু ধান পাওয়া যাবে।’
সিলমাদার গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হোসেন জানান, শিলা বর্ষণে একদিকে মাঠের ধান অন্য দিকে বাড়ির টিনের ছাউনি ছিদ্র হয়ে ঝাঁজরা হয়ে গেছে।
কৃষকরা বলছেন, এমনিতেই কয়েক বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এরমধ্যে শিলা বর্ষণে যে ক্ষতি হল তা হয়ত আর পোষানো সম্ভব হবে না।
এছাড়া আত্রাই উপজেলার মুনিয়ারী ইউপির পতিসরসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় চার শতাধিক হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বুধবার বিকেলে হঠাৎ করেই পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম আকাশে কালো মেঘ দেখা দেয়। কিছু ক্ষনের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যেই বৃষ্টির সাথে প্রবল বেগে শিল পরতে থাকে ।