বগুড়ায় ২ উপজেলায় সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগ

বগুড়া ধুনট ও গাবতলী উপজেলার কয়েকটি স্থানে দরিদ্রদের সহায়তায় সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2020, 11:40 AM
Updated : 18 April 2020, 11:50 AM

এরইমধ্যে জেলার কয়েকটি স্থানে আত্মসাতের ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃ্ংখলা বাহিনী।

লকডাউনের মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের জন্য যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ টাকা দামের চাল সংগ্রহের জন্য কার্ডের সংখ্যা ৫০ লাখ বাড়িয়ে দিয়েছেন, তখনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত চাল আত্মসাতের খবর আসছে।  

ধুনট উপজেলার বড়বিল্লা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান সরকারের সহায়তার তালিকায় এলাকার এমন অনেকের নাম তোলা হয়েছে যাদের কোনো অস্তিত্ব নেই।

ধুনটের বড়বিল্লা গ্রামের বাসিন্দা মহিলা ইউপি সদস্য কমলা বেগম বলেন, এই গ্রামের অনিতা রানি, শেফালি রানি, চায়না রানিসহ বেশ কয়েকজন হিন্দু নারীর নাম তালিকায় তোলা হয়েছে। কিন্তিু এই গ্রামে এমন নামের কেউ নেই। এই গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো লোকই নেই।

“এছাড়াও এই গ্রামের আব্দুল আলিম, জহুরা খাতুনসহ প্রায় অর্ধশত ব্যক্তির নাম তালিকায় আছে যারা কখনও চাল পায়নি।”

কমলা বেগম আরও বলেন, ডিলার ও গোসাইবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটন ‘ভুয়া নাম’ দিয়ে ডিলারশিপ নেওয়ার পর থেকে চাল আত্মসাৎ করে আসছেন।

তবে লিয়াকত আলী লিটন তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গাবতলী উপজেলার রানিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান মাহমুদ বলেন, রানিরপাড়া গ্রামের মৃত মোমেনার নাম তালিকায় তোলা হয়েছে। এছাড়া রেখা বেগম, লিপি খাতুনের নাম তালিকায় থাকলেও তারা কথনও চাল পাননি।  

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, জেলায় মোট ২৮৩ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার রয়েছে। চলতি মাসে ১৫৯১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে এ কর্মসূচি চালু হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে বছরে ৭ মাস এসব চাল বিতরণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, লকডাউনের মধ্যে দুর্দশায় পড়া শ্রমজীবী মানুষকে বিশেষ ওএমএসের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরের চাল দিতে রেশন কার্ডের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে এক কোটি করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েও না পাওয়া গেলে বিতরণ বন্টন বিষয়ে কথা বলেন গাবতলী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা হারুনার রশিদ।

তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা করা হয়। মাঝে মাঝে তালিকার পরিবর্তন হয়। কেউ মারা গেলে কিংবা পাওয়ার উপযুক্ত না এমন কেউ তালিকায় থাকলে তাদিরে বাদ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী ডিলাররা একসাথে সব চাল সউত্তোলন করে তাদের গুদামে রাখবে এবং তিন দিনের মধ্যে বন্টন করবে।

বগুড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগে ইতিমধ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, সারিয়াকান্দির কামালপুর ইউনিয়নের সভাপতি, গাবতলীর মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ওয়াজেদ আলীকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া চাল আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপি নেতা শিবগঞ্জের মাঝিহট্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর্জা গোলাম হাফিজ মো. সোহাগ।