চাল: এবার ইউএনও ও ওসির বিরুদ্ধে মামলা

ভোলায় সরকারি চাল ‘চুরির ঘটনায়’ আসামিকে ‘মুক্তি দেওয়ায়’ এক ইউএনও এবং ওসির বিরুদ্ধে সুয়োমোটো মামলা হয়েছে ভোলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2020, 05:01 PM
Updated : 16 April 2020, 05:22 PM

বৃহস্পতিবার ভোলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. ফরিদ আলম বোরাহানউদ্দিন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএও মো. বশির উদ্দিন গাজী ও ওসি এনামুল হকের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।

এবার ত্রাণে অনিয়মের জন্য বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানকে সাজা দেওয়া হলেও কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এটাই প্রথম কোনো মামলার খবর।

গত বুধবার ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা নতুন বাজারে মো. ছেলামত নামের এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে নয় বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করেন বোরহানউদ্দিন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির গাজী।

এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবসায়ী ছেলামতকে ১০ হাজার টাকা এবং ছেলামত যার ‘কাছ থেকে চাল কেনেন’ সেই ডিলার আ. মান্নানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন এ ইউএনও।

এ ঘটনাকে আসামিকে ‘মুক্তি দেওয়া’ হয়েছে বলে দেখছে এ আদালত।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস দুর্যোগের পরিস্থিতিতে ত্রাণের চাল আত্মসাৎ ও কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুদের অপরাধের ঘটনায়…‘জরিমানা করে মুক্তি প্রদান করেন।’

অপরাধের ধরণের ব্যাখ্যায় মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে-“ইহা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারার (১) ও (২) ধারার অপরাধ, যাহা স্পেশাল ট্রাইবুনাল কর্তৃক বিচার্য এবং যাহার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত। একই সাথে বর্ণিত ঘটনা যদি পেনাল কোড-এর ১৮৬০-এর ৩৭৯ ধারা (যাহার সর্বোচ্চ সাজা তিন বছর কারাদণ্ড), ৪০৩ ধারা (যাহার সর্বোচ্চ সাজা দুই বছর কারাদণ্ড) ৪১১ ধারা (যাহার সর্বোচ্চ সাজা তিন বছর কারাদণ্ড) ৪১৪ ধারা (যাহার সর্বোচ্চ সাজা তিন বছর কারাদণ্ড) সহ আরো অন্যান্য ধারায় অপরাধ মর্মে গণ্য করা যায়।”

এ ব্যাখা দিয়ে মামলায় বলা হয়েছে, “একই সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী হলে এই ত্রাণের চাল দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং তৎসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় মর্মে প্রতীয়মান হয়। দুর্নীতি দমন বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্ত এবং স্পেশাল ট্রাইবুনাল কর্তৃক বিচার্যের অপরাধ।”

মামলায় অপরাধের ‘প্রকৃত বিচারের পথ রুদ্ধ করে’ তাকে নামমাত্র শাস্তি তথা জরিমানা করে ‘দায়মুক্তি দেওয়ায়’ ইউএনও-র বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই সুয়োমোটো মামলায় আগামি ২৮ এপ্রিল ‘মোবাইল কোর্ট পরিচালনার যাবতীয় ডকুমেন্টস ও আইনানুগ ব্যাখ্যাসহ’ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. ফরিদ আলমের আদালতে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন থানার ওসিকেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।