চাল: দল থেকে বহিষ্কৃত কোরবানের পক্ষে এমপি ফিরোজ

ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে আটক পাবনার ঢালারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদারকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছেন দলের নেতারা।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2020, 02:27 PM
Updated : 14 April 2020, 02:51 PM

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স মঙ্গলবার এ তথ্য জানান।

ত্রাণ নিজের গুদামের রাখার অভিযোগে গত সোমবার রাতে বেড়া উপজেলার বাধেরহাট বাজার থেকে র‌্যাবের হাতে আটক কোরবান আলী সরদার হন। সেখানে ত্রাণের চাল রাখতে পারেন না বলছেন ইউএনও।

এদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবীর এই ঘটনাকে কোরবান আলীর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে মনে করছেন। তার দাবি, বাধেরহাটের চাল উদ্ধারের স্থানটি ঢালারচর ইউনিয়নের ‘অস্থায়ী কার্যালয়’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।’

উদ্ধারের দিন র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কমান্ডার আমিনুল কবীর তরফদার বলেছিলেন, বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ত্রাণ না রেখে বিক্রির উদ্দেশ্যে ওই উপজেলার রূপপুর ইউনিয়নের বাধেরহাট বাজারে নিজের ব্যবসায়িক গুদাম ঘরে রেখেছিলেন।

ঢালারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।              

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স জানান, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের নির্দেশে কোরবান আলী সরদারকে ‘দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের চাল বা অন্য কোনো মালামাল পরিষদের বাইরে কিন্তু ইউনিয়নের ভেতর কোথাও রাখলে প্রশাসনকে অবহিত করতে হয় বলে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী জানিয়েছেন।

এখানে ঢালারচর ইউনিয়নের চাল উদ্ধার করা হয়েছে রূপপুর ইউনিয়নের বাধেরহাট বাজারে কোরবান আলী সরদারের নিজস্ব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের গুদাম থেকে।

ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী আরও বলেন, “ত্রাণের চাল কোনোভাবেই ব্যক্তিগত গুদামে রাখার সুযোগ নেই। কোরবান আলী সরদার ইউনিয়নের সীমানার বাইরে বেআইনিভাবে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। সেখানে ত্রাণের চাল মজুদ করার বিষয়েও তিনি প্রশাসনকে অবহিত করেননি।”

তবে, বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র দাবি করে সাজানো ঘটনায় কোরবান সরদারকে ফাঁসানো হয়েছে বলে সাফাই গেয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবীর।

পাবনা-২ আসনের (সুজানগর ও বেড়ার একাংশ) এ সংসদ সদস্য মঙ্গলবার পাবনা আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, “ঢালারচর ইউনিয়নের কাজ রূপপুর ইউনিয়নের বাধেরহাট বাজারে করা হচ্ছে এর জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া আছে কি-না জানি না।”    

তবে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কাগজপত্রে বাধেরহাট অস্থায়ী কার্যালয় বলে উল্লেখ আছে এবং সেখান থেকে ট্যাগ অফিসাররা বিভিন্ন সময় ঢালারচর ইউনিয়নের মালামাল দেন বলেও সাংসদ আহমেদ ফিরোজ কবীর জানান।

অনেক আগে থেকে কোরবান আলী সরদার বাধেরহাটে এ ইউয়িন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন এবং কোনো অভিযোগ পাননি বলে আহমেদ ফিরোজ সাংবাকিদের জানান।