রাজশাহীতে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষুব্ধ দিনমজুররা

সরকারি সহায়তার দাবিতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন একটি গ্রামের ঘরবন্দি দিনমজুররা।

বদরুল হাসান লিটন রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2020, 06:24 PM
Updated : 13 April 2020, 06:24 PM

সোমবার মৌগাছি ইউনিয়নের বিদিরপুর গ্রামে এই মানববন্ধনে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। এ সময় তারা ত্রাণের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে ছুটি ঘোষণা করে সরকার সবাইকে ঘরে থাকতে বলে এবং কর্মহীনদের খাবারের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেয়।

কিন্তু সহায়তার দাবিতে ইতিমধ্যে জামালপুর, যশোরসহ কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। জামালপুরে একদল জনতা ত্রাণের ট্রাকও লুট করেছে।

বিদিরপুরের মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এলাকার শতাধিক মানুষ সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকতে গিয়ে অনাহারে দিন কাটাছে। কিন্তু তাদের ঘরে সরকারি কিংবা ব্যক্তিগত কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় তারা ত্রাণের আশায় সড়কে নামতে বাধ্য হন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন বলেন, তারা সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু সরকার তাদেরকে ঘরে থাকতে বলেছে। এমন অবস্থায় তারা ঘরে থাকতে গিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বর্তমানে তাদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তাদের কাছে জরুরিভাবে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া না হলে কাজের সন্ধানে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন।

তারা আরও জানান, ত্রাণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যন, মেম্বারদের কাছে গেলেও তারা কানে নিচ্ছেন না। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ সামান্য হওয়ার কথা বলে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। আগামীতে ত্রাণ আসলে তাদের দেওয়া হবে বলে বিদায় করে দিচ্ছেন।

বিদিরপুর বাজারের মুদি দোকানদার সোহাগ আলী বলেন, বর্তমান করোনাভাইরাস সংক্রমনরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরবন্দি মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, নগদ টাকাসহ নানা রকমের জিনিষ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এ এলাকায় সরকারের দেওয়া এসব ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি।

মৌগাছি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি লিকায়ত আলী বলেন, ত্রাণ তো দুরে থাক এই এলাকার সাধারণ দিনমজুর ও কৃষকদের সচেতন করতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। এছাড়াও ত্রাণ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিন বিশ্বাস বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু ত্রাণ এসেছে তা সুষ্ঠভাবে বিতরণ করা হয়েছে। যারা ত্রাণ পায়নি তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে আগামীতে তাদের মধ্য ত্রাণ বিতরণ করা হবে।”

মানববন্ধনের কথা শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানওয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট লিটন দে, মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ। তারা ত্রাণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজনকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। প্রশাসনের আশ্বাসে তারা বাড়ি ফিরে যান।