নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে ‘মাদকবিরোধী সভা’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগমের সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় এক ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ‘মাদকবিরোধী সভা’ হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2020, 06:21 PM
Updated : 10 April 2020, 07:05 PM

শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মুকুল বিষয়টি জানিয়েছেন। এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তার ফেইসবুকে মাদকবিরোধী সভার কিছু ছবি পোস্ট করেন।

এসব ছবিতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে পাশাপাশি বসে রয়েছে। অনেকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করেছে; অথচ খোদ চেয়ারম্যান মুকুলের মুখেই মাস্ক নেই। ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় গাদাগাদি করে মানুষজন বসে আছে।

মাদকবিরোধী সভায় উপস্থিত সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের একাধিকবার গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের নামে একাধিক মামলাও রয়েছে। তারপরও তারা নানা কৌশলে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্থানীয় লোকজন চৌধুরীহাট এলাকা লকডাউন করে। এরপরও ওই চার মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে লোকজন যাতায়াত করে। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের বাকবিতণ্ডা হয়।

ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, “এলাকায় মাদক ব্যবসা যাতে না করে এ নিয়ে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মাদকবিরোধী সভা হয়।”

এছাড়াও ওই সভায় সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মুকুল, সাবেক চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ডা. মাজেদুল হক, সাধারণ সম্পাদক আবু দাইয়াম জনি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাহাবুদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাহেব, ৭ নম্বরের বুলেট, গণ্যমাণ্যব্যক্তিসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

সালন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাইয়াম জনি বলেন, “চারজন মাদক ব্যবসায়ীর কাছে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে তারা যেন আর মাদক ব্যবসা না করে। এ সময় এলাকার গন্যমান্য থেকে শুরু করে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

“১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই আমাদের কার্যক্রম শেষ হয়। আমরা সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখেই এই মাদকবিরোধী সভা করি।”

সরকার সারাদেশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে তা উপেক্ষা করে আপনি কেন মাদকবিরোধী সভা করলেন এমন প্রশ্নে চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মুকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাদকবিরোধী সভায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ স্থানীয় অসংখ্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিল।”

মাদক বিক্রেতাদের সাথে বসার কথা থাকায় সভা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব মানে ২ ফিট বা ৩ ফুট দুরে দূরে বসে মাদকবিরোধী সভা করেছি। বহুদিনের প্রতিক্ষার পর আজ ওই ৪ মাদক ব্যবসার কাছে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। এতে এলাকার মানুষ সন্তুষ্ট হয়েছে।”

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই মুহূর্তে কোন ধরনের জনসমাবেশ, সভা, মিটিং কোন কিছুই করা যাবে না। তারপরও চেয়ারম্যান সাহেব এই মাদকবিরোধী সভা কীভাবে করে এটিই প্রশ্ন?

“চেয়ারম্যান মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”