ঢাকায় মৃত্যু, মুন্সীগঞ্জে জানাজার খবরে আতঙ্ক

ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর মুন্সীগঞ্জে জানাজার খবরে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকমুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2020, 07:51 AM
Updated : 11 April 2020, 03:33 AM

তবে কুর্মিটোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়; তার মেডিকেল হিস্ট্রিতে হৃদরোগের কথা ছিল, করোনাভাইরাসের কোনো ‘লক্ষণ সেখানে ছিল না’।

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পশ্চিম শিয়ালদা গ্রামের ওই ব্যক্তি একটি মাদ্রাসার পরিচালক ছিলেন।

সিরাজদিখান থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে বৃহস্পতিবার রাতে গুঞ্জন ছড়ায়। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ নেয়।

“কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে গোপনে লাশ এনে মুন্সীগঞ্জে তারা বড় জানাজা করেছে বলে একটি কথা শোনা যাচ্ছিল। ফলে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছিল। সে কারণে তার মৃত্যুর আগে ও পরে যারা তার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাদের বাড়ি পুলিশ অবরুদ্ধ করেছে।”

ওসি জানান, ওই ব্যক্তি ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় থাকতেন। সেখানে গোসল করিয়ে সিরাজদিখানে তার ভাইয়ের বাড়িতে লাশ এনে জানাজার পর দাফন করা হয়। তার ঢাকার বাড়িও পুলিশ অবরুদ্ধ করেছে।

তবে অবরুদ্ধ করার আগে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়ার খবর শুনে মৃত ব্যক্তির ছেলে লাপাত্তা হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফিকুন নাহার।

তিনি বলেন, “এলাকার লোকজন জানাজায় অংশ নেওয়ায় পুরো গ্রামটি অবরুদ্ধ করা হচ্ছে। বাইরে থেকে আর কেউ তার সংস্পর্শে এসেছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা কবরে লাশ নামিয়েছেন তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।”

ওই ব্যক্তির করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল কি না জানতে কুর্মিটোলা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

তিনি বলেন, গত বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই রোগীকে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়। কুর্মিটোলা হাসপাতালে আসার পর মরদেহ গাড়িতেই ছিল।

“আমরা তার কাগজপত্র, রোগ হিস্ট্রি দেখেছি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ ছিল না তার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। আগেও স্ট্রোক করার ইতিহাস আছে তার। সম্ভবত হার্ট অ্যাটাকেই মারা গেছেন তিনি। কোভিড-১৯ রোগী হঠাৎ করে মারা যায় না। তার শরীরে রোগের প্রভাব পড়ে ধীরে ধীরে।”

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল কি না জানতে চাইলে জামিল আহমেদ বলেন, “আমরা ওই ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রেখে আইইডিসিআরে নমুনা পাঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার স্বজনরা রাজি হননি। তারা মরদেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিলেন।

“যেহেতু তারা রাজি হচ্ছিলেন না আর করোনাভাইরাসের লক্ষণও ছিল না, এ কারণে আমরা তাদের ছেড়ে দিয়েছি। তারা কোনো ডেথ সার্টিফিকেটও নেননি। আমাদের এখানে ভর্তি রোগী হলে আমরা কখনোই ছাড়তাম না।”