রাতের আঁধারে হতদরিদ্রের ঘরে দিচ্ছেন খাবার

নির্জন রাতের সুনশান কুমিল্লা নগরীতে কাজ ছেড়ে ঘরে আটকা পড়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে বেড়াচ্ছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এক সংসদ সদস্য।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2020, 11:39 PM
Updated : 8 April 2020, 11:49 PM

সরকার সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় প্রায় সব কিছু বন্ধ করে দিলে তিনি তার এলাকার মানুষদের জন্য পথে নামেন। নিভৃতে প্রচারের বাইরে থেকে তিনি একাজ শুরু করলেও শেষমেশ গোপন থাকেনি তা সাংবাদিকদের কাছে।

সপ্তাহব্যাপী অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী হাতে হাতে পৌঁছে দিতে অলিগলিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কড়া নাড়েন সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা।

আঞ্জুম সুলতানা সীমার পিএস জয়ন্ত দেবনাথ জানান, গত এক সপ্তাহে এমপির ব্যক্তিগত অর্থায়নে কুমিল্লার নগরের ২৭টি ওয়ার্ড ও ৬টি ইউনিয়নে তিনটি ভাগে তালিকা করে সাহার্য্য করা হচ্ছে।

দুস্থদের দিচ্ছেন ১০ কেজি চাল-ডালসহ আট রকম পণ্য, মধ্যবিত্তদের পাঁচ কেজি চাল, শ্রমিকদের আট কেজি চালসহ আট রকম জিনিস বস্তা ভরে প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে।

“ইতিমধ্যে দুই হাজার চারজনকে দেওয়া হয়েছে।”

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এই এমপি বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যতটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আমি সাহায্য করছি।

“এ মহামারী যতদিন থাকবে ততদিন করে যাব। তবে প্রচার করে না।”

সাহায্য গ্রহীতাদের ছবি প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধও করেন তিনি।

তারপরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়।

ইপিজেড এ চাকরি করা নগরীর ২২নং ওয়ার্ডেও মিজানুর রহমান পিটু বলেন,“এখনো এ মাসের বেতন পাইনি। ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। রাত সাড়ে ৯টায় হঠাৎ ঘরের দরজার ধাক্কা দিয়ে বাড়ির মালিক ডাক দেয়।

“আমি মনে করলাম বাসার ভাড়ার জন্য ডাক দিয়েছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল। দরজা খুলেই দেখি সীমা আপা সালাম দিয়ে একটি বস্তা নেওয়া জন্য বলল।”

তাকে দেওয়া বস্তায় ৫ কেজি চাল, ৩ কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি মসুর ডাল, ২ কেজি আটা, ২ কেজি সয়াবিন তেল, ২টি সাবান, ২টি মাস্ক ও ১টি হ্যান্ড সেনিজাইজার ছিল।

চর্থার আলেয়া বেগম জানান, রাতের বেলায় এমপি নিজে এসে চাল-ডাল সাহায্য করায় তিনি অবাক হয়েছেন।

নুরপুর এলাকার শরীফ আহমেদ জানান, রাতে তাদের এলাকার অসহায়দের নিজেই খাদ্য সামগ্রী দিয়ে গেছেন।

ঠাকুরপাড়ার অধ্যক্ষ তাপস পাল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে করোনাভাইরাসের প্রকোপে নিম্নবিত্ত মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটালেও লজ্জায় মুখ খুলে কারো কাছে কিছু চায় না।

“এ অবস্থায় সামর্থবানদের উচিত এমপির অনুকরণে কর্মহীন ও হতদরিদ্রদের প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।”