সীমান্তের শূন্য রেখায় পড়ে এখনও সেই ‘প্রতিবন্ধী’ নারী 

গত পাঁচ দিন ধরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্য রেখায় পড়ে আছেন এক ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ নারী।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিআবু দাউদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2020, 12:54 PM
Updated : 6 April 2020, 12:57 PM

তিনি বালাদেশের নাগরিক নাকি ভারতের-এই প্রশ্নের উত্তর না মেলায় তাকে কোনো দেশের সীমান্তরক্ষীরা ঢুকতে দিচ্ছে না। 

পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির রামগড় শহরের অদূরে ফেনী নদীর বালুর চরে গত বৃহস্পতিবার থেকে অবস্থান করছেন এই প্রতিবন্ধী নারী। প্রথমদিকে খাবার দিতে বিজিবির সদস্যরা বাধা দিলেও এখন বাংলাদেশ থেকে কেউ কেউ তাকে খাবার দিয়ে আসছেন; তারা বাধা দিচ্ছে না।

এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও কোনো সমাধান করতে পারেনি তারা।

সোমবার রামগড় ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারিকুল হাকিম বলেন, “বিএসএফের সঙ্গে ফের কথা বলার চেষ্টা চলছে। কোনো অগ্রগতি নেই; হলে আপনাকে জানানো হবে।”

গত পাঁচদিন ধরে একই জায়গায় বালুর উপর এই নারী ঝড়-বৃষ্টি ও রোদের মধ্যে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখিও হয়েছে।

সীমান্তের রামগড়ের এসডিও বাংলো এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিবন্ধী নারী যেখানে অবস্থান নিয়ে রয়েছেন তার খুব কাছেই আমারি বাড়ি। আমার ছেলে মজিব বেলা আনুমানিক ৩টার দিকে পাগলিটার জন্য আপেল, আংগুর ও কমলা রেখে এসেছে। তখন সে একটি বস্তার উপর বসা ছিল।”

স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রথমদিকে বিজিবির সদস্যরা খাবার পৌঁছাতে বাধা দিলেও এখন তারা সহযোগিতা করছেন।

রামগড়ের সমাজকর্মী বেলাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ অংশ থেকে প্রতিবন্ধী নারীর কাছে খাবার দিলেও ভারতীয় অংশ থেকে কোনো ধরনের সহায়তাই করা হয় না। তার খাদ্য সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসতেও দেখা যায় না।

স্থানীয় সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন লাভলু বলেন, “গতকাল (রোববার) বিকালে ভারতের সাব্রুম থেকে কয়েকজন কর্মকর্তা এই মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর কাছে এসেছিলেন। কিছু কথাবার্তা বলার চেষ্টা করে তারা ফিরে যান।”

স্থানীয় সাংবাদিক শ্যামল রুদ্র বলেন, “কর্তৃপক্ষ একটু মানবিক হলেই অসহায় মহিলাটির জন্য ফেনী নদীর তীরে শেড তৈরি করে দিতে পারে। এতে কারোরই ক্ষতি হয় না। ঝড়-বৃষ্টিতে তার কী অবস্থা হচ্ছে তা কি কেউ একবার ভেবে দেখেছেন না! তার সুরক্ষার কথা কেউ ভাবছে না!”

এলাকাবাসী জানান, প্রতিবন্ধী এই নারীর দিকে অস্ত্র তাক করে রয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা। এই নারী এখানে আসার পর বিএসএফ কাছাকাছি দুটি জায়গায় অবস্থান গ্রহণ করেছে।