বগুড়ায় টিসিবি পণ্যের লাইন দখলে ইট-স্যান্ডেল

বগুড়ায় ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে এক শ্রেণির লোক ইট, পাথর, ডাবের খোসা, ছেঁড়া স্যান্ডেল দিয়ে লাইন দখল করছে।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2020, 11:54 AM
Updated : 6 April 2020, 09:42 PM

এ কারণে সাধারণ অনেক ক্রেতাকে পণ্য না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। সাধারণ ক্রেতারা ওই ‘লাইন দখলদারদের’ বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস করেন না।

বগুড়া শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবির এমন সাতটি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র আছে বলে জানান জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ।  

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে বগুড়া সার্কিট হাউজের সামনে দেখা গেছে, বেলা ১২টা থেকে পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও সকাল থেকে পণ্য বিক্রয় গাড়ির প্রতীক্ষায় লাইনে দাঁড়াতে আসেন নিম্ন আয়ের লোকজন।  

কিন্তু লাইনের সামনে দেখা যায় ইট, পাথর, ডাবের খোসা, ছেঁড়া স্যান্ডেল দিয়ে লাইন দখল রাখা হয়েছে দেখা গেল।

সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে দেখা যায়, সার্কিট হাউস থেকে জজ আদালতের দক্ষিণ পাশের্ আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠের সড়ক পর্যন্ত আধা কিলোমিটারের বেশি জায়গায় প্রায় ৭/৮ শ লোক দাঁড়িয়ে আছে।

এই লাইনের মাঝেই ইট, পাথর, ডাবের খোসা, ছেঁড়া স্যান্ডেল রেখে জায়গা রাখা আছে।

লাইনে দাঁড়ানো সূত্রাপুর এলাকার সালেমা বেগম বলেন, তিনি সকাল সাড়ে ৮টায় এসে দেখেন সামনের অংশে ইট, পাথর, ডাবের খোসা, ছেঁড়া স্যান্ডেল দিয়ে লাইন করা আছে। ছেঁড়া স্যান্ডেল সড়িয়ে লাইনে দাঁড়াতে গেলেই এক যুবক পাশ থেকে এসে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলে-‘এটা আমার লাইন’।

ওই যুবকের হাতে পণ্য নেওয়ার জন্য কোনো ব্যাগ ছিল না বলে তিনি জানান।

জলেশ্বরীতলার সাদেক হোসেন বলেন, “পরে মালামাল পাই কিনা তাই ৫০ টাকা দিয়ে একটি ডাবের খোসার লাইন কিনে নিয়েছি। গতকাল লাইনে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই ৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি।”

জজ আদালতের সামনে এক ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা জানান, প্রতিদিনই এক ধরনের লোকজন বিভিন্ন জিনিস সামনে রেখে আগেই লাইন দখল করে রাখে। ছোট ছোট ছেলেদের ১০/২০ টাকার বিনিমেয়ে ওইসব মাল তুলে নেয়।

পরে বাজারে বেশি দামে ওইসব পণ্য বিক্রি করে দেয় বলে তিনি জানান।

টিসিবির ডিলারের পক্ষ থেকে মাল বিক্রি করতে আসা মো. আসাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে পণ্য আনা হয়েছে তা ৪শ’ জনকে দেওয়া যাবে; কিন্ত লাইনে দেখছি ৭/৮শ’। এত লোককে দেওয়া সম্ভব হবে না।”

ইট, পাথর, ছেড়া স্যান্ডেল, ডাব যারা রেখে যায় এরা কারা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “ওটা প্রশাসন দেখবে।”

বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, এটা তাদের জানা ছিল না। এখন যেহেতু জেনেছেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সাধারণ গাড়ির সলগ্ন যেখানে পণ্য বিক্রি করা হয় সেখানে সাধারণত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন থাকেন। লাইনের পেছনের দিকে থাকেন না। এখন বিষয়টি খেয়াল রাখা হবে।