করোনাভাইরাস: বেচাবিক্রি নেই, মুন্সীগঞ্জের দুগ্ধ খামারিরা সরকারি প্রণোদনা চান

নভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে প্রায় সবকিছু বন্ধু থাকায় দুধ বেচতে না পেরে লোকসানের মুখে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ডেইরি ফার্মের মালিকেরা। বেচাবিক্রি নেই; তার ওপর আবার গো-খাদ্যের দামও চড়া। এমন পরিস্থিতিতে খামার টিকিয়ে রাখতে সরকারি প্রণোদনা চেয়েছেন তারা।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2020, 06:29 AM
Updated : 5 April 2020, 07:00 AM

খামারিরা জানান, শ্রীনগর উপজেলার প্রায় ৫০০ গরুর খামারে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির আগে তারা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করতেন। এখন উৎপাদনের পরিমাণ একই থাকলেও লকডাউনের মধ্যে দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।  

পাশাপাশি গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং প্রায় সব দোকান বন্ধ থাকায় তা সংগ্রহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তারা।  

শ্রীনগর উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিক রাজু বলেন, “একেই তো খামারিদের দুধ বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে অপরদিকে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামার টিকিয়ে রাখাটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বর্তমান সময়ে সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজন।”

শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়ন ও রাড়িখাল ইউনিয়নের কয়েকটি খামারে সরেজমিনে দেখা যায়- দুধের বাজার মন্দা হলেও খামারিদের কাজ থেমে নেই। কেউ গরুকে খাবার দিচ্ছেন, কেউ ব্যস্ত দুধ সংগ্রহ করতে। আবার কোনো কোনো খামারি গরুর পরিচর্যা করছেন।

রাড়িখাল ডেইরি ফার্মের মালিক মো. সায়েদুজ্জামান খান বলেন, “প্রতিদিন এখানকার দুধ ঢাকার ভাগ্যকুল, রস, বিক্রমপুর, মুসলিম সুইটমিট, বনফুলসহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হত। কিন্তু বর্তমান সময়ে করোনার প্রভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে শ্রীনগরের পাঁচশতাধিক খামারি।”

শ্রীনগর উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জিএম খালিদ বলেন, করোনা প্রভাবে খামারিরা দুধ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তারা পানির দরে ফেরি করে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তারা লোকসানের মুখে পড়ছেন।

শ্রীনগর উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন  সভাপতি হাজী জব্বর সারেং বলেন, “উপজেলার কৃষকরা ২৫  থেকে ৩০ টাকা দরে দুধ বিক্রি করছেন। আবার অনেককে ২০ টাকা দরেও দুধ বিক্রি করতে দেখা গেছে।”

এ অবস্থায় দুগ্ধশিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকারকে দ্রুত বিকল্প পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার বলেন, লোকসানের মুখে পড়া খামারিদের বিষয়ে সরকারকে অবহিত করা হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।