রিকশাচালক স্বামী আর পোশাক কারখানার কর্মী দুই মেয়ে নিয়ে এক রকম উপোসেই কাটিয়েছেন এ কদিন তিনি।
সরকারি ঘরের থাকার কর্মসূচিতে প্রকৃত বিপদগ্রস্ত মানুষ খুঁজতে গিয়ে অবশেষে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খোঁজ পায় তাদের।
শনিবার তারা তুলে দেয় সাতদিন চলার মত খাদ্যসামগ্রী ছালেহা বানুর হাতে।
আশুলিয়া গ্র্যাজুয়েটস্ এসোসিয়েশনের এসব জিনিস পেয়ে পঞ্চাশোর্ধ ছালেহা বানুর বলেন, “আল্লাহ তোমাদের পাঠাই ছিনু বাবা, দুই বেটি ছাওয়াল লয়ে বড়ই কষ্টি ছিনু বাবা।”
তারপর আবেগ জড়িত কণ্ঠে জানান ড়ত সাত দিনে তাদের কষ্টের কথা।
তার স্বামীর রিকশাচালক চালানো প্রায় বন্ধ। দুই মেয়ে গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করে তাদের কারখানা বন্ধ। কলকারখানা বন্ধ থাকায় গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অন্যের বাসায় তার রান্নার কাজও বন্ধ রয়েছে। তবু অন্যের কাছে সাহায্য চাইতেও পারছিলেন না এ পরিবার।
ছালেহা বলেন, “ঘরে কোনো দানাপানি নাই। দুই মেয়ে নিয়ে বড়ই কষ্টে ছিলাম।
“অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করতাম। আর আমার বাড়িতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চুলাই জ্বালাইতে পারি নাই। এটা-ওটা খেয়ে মেয়ে দুইটা নিয়া দিন পার করছি। আজকে পেট ভরে কয়ডা ভাত খামু।”
শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আশুলিয়া থানা এলাকার বিভিন্ন মহল্লায় ঘুরে আশুলিয়া গ্র্যাজুয়েটস্ এসোসিয়েশনের শতাধিক সদস্য খুঁজতে থাকেন ছাহেলা বানুদের মত অসহায় পরিবারগুলো।
এদিন প্রায় তিনশ’ পরিবারের কাছে খাবার পৌঁছেছেন বলে জানালেন সংগঠনটির সদস্যরা। তাদের প্যাকেটে রয়েছে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তেল, আলু ও সাবান।
‘নিরাপত্তার স্বার্থে আপনি ঘরে থাকুন, আমরাই খাবার পৌঁছে দেব আপনার বাড়িতে’ স্লোগানের ব্যানার ও প্লেকার্ড নিয়ে রিকশাভ্যান আর ঠেলাগাড়িতে করে একাধিক গ্রুপে ভাগ হয়ে তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন এমন মানুষের খোঁজে।
এতে অংশ নেন আল মামুন, এস এম আমিরুল ইসলাম আসিফ, শফিক দেওয়ার, রাজু দেওয়ার, আবদুর রশীদ পলান, মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, ইকবাল মন্ডলসহ সংগঠনের শতাধিক সদস্য।