এছাড়া বাঘ ও সাপের ভয় ত সেখানে আছেই। প্রতিবছর সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকে মারা যান। কিন্তু মৌয়ালরা বলছেন, ১৮ চৈত্র থেকে ১৮ বৈশাখ হল সুন্দরবনের মধু আহরণের সময়। এ সময় ঘরে বসে থাকলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে।
নজরুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মধু সংগ্রহের পথে পথে মৌয়ালদের রয়েছে নানা রকম বাধা। তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন হল বাঘের হামলা মোকাবিলা।
“বিভিন্ন সময় মধু সংগ্রহে যাইয়ে এই বাঘের থাবায় শতাধিক মৌয়াল মরে গেছে। আর এইবার তার সাথে যোগ হইছে করোনাভাইরাস মহামারী। এ কারণে এইবার উদ্বোধন অনুষ্ঠা হয় নাই।”
মৌয়ালরা জানান, এই সময়টা তারা সঙ্গে থাকা চিঁড়ে ভিজিয়ে গুড় দিয়ে খান। প্রসাব-পায়খানা করতে হয় জঙ্গলেই। গোসল নদীতে। তখন দলছাড়া হলেই বাঘ বা কুমিরের হামলার আশঙ্কা।
দাতিনাখালীর মৌয়াল খালেক মিয়া বলেন, মৌয়ালদের সারা বছরের একমাত্র কাজ হল মধু সংগ্রহ। এ কারণে করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও বন বিভাগ তাদের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আগের নিয়ম পাল্টে এবার এক মাসের বদলে দুই মাস সুযোগ দেওয়া হেয়ছে। ১৮ চৈত্র থেকে ১৮ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত।
মৌয়ালরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যান। কিন্তু কেউ তাদের খবর নেয় না বলে মৌয়াল পরিবারের নারীরা আক্ষেপ করেছেন।
শেফালী খাতুন নামে এক নারী বলেন, মধু সংগ্রহ করতি যাইয়ে সাতক্ষীরায় বহু মৌয়ালের জীবন গেছে। কেউ তাদের খোঁজ নেয় না।
সুন্দরবন বাংলাদেশের মধুর একটি অন্যতম প্রধান উৎস। এখান থেকে প্রতিবছর কয়েকশ টন পায় বাংলাদেশ।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান বলেন, চলতি মৌসুমে শুধু সাতক্ষীরা রেঞ্জে ১০৫ টন মধু ও ২৬ টন মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বছর সাতক্ষীরা রেঞ্জ দিয়ে ১৭২ জন মৌয়াল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছেন বলে তিনি জানান।