১১ বছর বয়সী রিফাত খুলনা শহরের খালিশপুরের বিহারি ক্যাম্প ১-এর মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে।
রিফাতের নানা কলিমুদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার নাতি লিভার সিরোসিসে রোগী। মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে তার অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
“কিন্তু সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়নি। সেখানকার চিকিৎসকরা কাগজে ওষুধ লিখে বিদায় করেন। এরপর রিফাতকে নিয়ে খালিশপুর ক্লিনিকে যাই। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন কোনো রোগী ভর্তি করা যাবে না। এরপর তাদের পরামর্শে রিফাতকে সার্জিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানেও তাকে ভর্তি না করে ময়লাপোতার একটি হাসপাতালে পাঠায় তারা। ময়লাপোতার হাসপাতালে একইভাবে রোগীকে ভর্তি না করে ফেরত দেওয়া হয়।”
হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে রিফাত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যায়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে গোয়ালখালী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নভেল করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালেই চিকিৎসকদের মধ্যে মানবিকতা কমছে বলে জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন সুজাত আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা বন্ধ করা হয়নি। দায়বদ্ধতা থেকে এ রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া উচিত ছিল। তবে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনাভাইরাসের কারণে মানবিকতা কমছে।”
কেন রিফাতকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শেখ আতিয়ার রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কায় চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা পাবেন না সে রকম পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।
রিফাতের বিষয়টি তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে খালিশপুর ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “লিভার সিরোসিস রোগীর জন্য আইসিইউ দরকার হয়। জটিল অবস্থায় থাকার কারণে রিফাতকে ভর্তি না করে চিকিৎসক সার্জিক্যাল হাসপাতালে রেফার করেছেন হয়তো। এটা আমাদের ক্লিনিকের নিয়ম মেনেই করা হতে পারে। তার পরও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।”