থানায় আসামির মৃত্যুতে আমতলীর ওসি প্রত্যাহার

বরগুনার আমতলী থানায় একজনের মৃত্যুর কারণ তদন্তের পর ওসি ওসি আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2020, 02:17 PM
Updated : 27 March 2020, 02:17 PM

শুক্রবার বিকালে পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের এক আদেশে বরিশাল ডিআইজির নির্দেশে বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

থানায় আসামির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, “তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাৎক্ষণিকভাবে আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও ডিউটি অফিসার এএসআই আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন।

এ ঘটনায় থানায় নিহত শানু হাওলাদার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের আমতলীর কলাগাছিয়া গ্রামের হযরত আলী হাওলাদারের ছেলে।

গত ৩ নভেম্বর পশ্চিম কলাগাছিয়া গ্রামে ইব্রাহিম নামে একজনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

গত বৃহস্পতিবার আমতলী থানার ওসি আবুল বাশার বলেন, ওই মামলার অভিযোগপত্রে কোনো আসামি নাম না থাকলেও গত ২৩ মার্চ রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে শানু হাওলাদারকে আটক করে পুলিশ। ওই রাতে পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রীর কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়।

“রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু ‘ক্লু’ পাওয়া যায় “

থানার সেন্ট্রি গত বৃহস্পতিবার সকালে শানুকে শৌচাগারে নিয়ে যায় জানিয়ে ওসির দাবি করেন, “তারা জানায় শৌচাগার থেকে ফিরে এসে শানু দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।”

তবে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী জানিয়েছেন, শানুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

শানুর ছেলে সাকিব হাওলাদার জানান,পুলিশ তাদের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেছিল। তারা ১০ হাজার টাকা পুলিশকে দিয়েছেন।

শানুর স্ত্রী ঝর্না বেগম বলেন, “টাকা দিতে না পারায় পুলিশ আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।”

এ ঘটনার পর বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মহব্বত আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম।

ওসি আবুল বাশারের প্রত্যাহারের খবর শুনে নিহত শানুর ছেলে সাকিব বলেন, “তিনিই টাকা না পেয়ে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকারী ওসির দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই “

স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, একজন নির্দোষ মানুষকে টাকার জন্য থানায় নির্যাতন করে হত্যা করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না।

তবে এ ঘটনার পরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মামলা করা হয়নি।