সাদুল্লাপুরে ব্যবসায়ীরাই বন্ধ করলেন দোকানপাট

যুক্তরাষ্ট্রফেরত দুইজনের করোনাভাইরাস শনাক্তের পর উদ্বেগের মধ্যে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরের ব্যবসায়ীরাই স্বউদ্যোগে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2020, 03:35 PM
Updated : 24 March 2020, 03:35 PM

মঙ্গলবার বিকাল ৫টার পর উপজেলা শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ করে দেয় উপজেলা বণিক সমিতি।

তবে ওষুধ ও মুদি দোকান এই সিদ্ধান্তের আওতার বাইরে থাকবে বলে জানান উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন।

এছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সীমিত আকারে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অতি প্রয়োজনে খোলা রাখা যাবে বলেও তিনি জানান।

এদিকে, করোনাভাইরাসে সক্রমিত যুক্তরাষ্ট্রফেরত দুজনের সংস্পর্শে আসা শতাধিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে গাইবান্ধায় আসা আইইডিসিআর প্রতিনিধি দল। সাদুল্লাপুর, গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ও বগুড়ায় তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

গত ১১ মার্চ সাদুল্লাপুর উপজেলার একটি গ্রামের এক বাড়িতে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী দুই আত্মীয়। তারা ওই বাড়িতে প্রায় অর্ধশতাধিক লোকের সঙ্গে দুদিন থেকে ১৩ মার্চ সেই বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেয়ে গাইবান্ধা শহরে নিজেদের বাড়ি চলে যান। পরে তাদের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি সাদুল্লাপুরে সবকিছু বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেও জেলা প্রশাসন তাতে সায় দেয়নি।

উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন বলেন, “এরপর আরও দুইদিন অপেক্ষা করা হল; কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ না আশায় আমারা ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুরক্ষার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যেহেতু এটি মফস্বল শহর, স্থানীয় লোকজন সাংসারিক কাজকর্ম শেষ করে বিভিন্ন প্রয়োজনে বিকালের পর উপজেলা শহরে আসেন। আবার অনেকে হোটেল বা চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেন। একারণে সাময়িকভাবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন এবিএম আবু হানিফ বলেন, করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে আসা শতাধিক আত্মীয়-স্বজনকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চিহ্নিত করেছে গাইবান্ধায় আসা আইইডিসিআরের ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

“তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই দুই জনের সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদেরও খোঁজ অব্যাহত রেখেছেন। এ পর্যন্ত চিহ্নিত ব্যক্তিসহ পরিবারের সদস্যদের নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।”

সিভিল সার্জন আরও জানান, শনাক্ত করা শেষ হলে এদের মধ্যে যাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ দেখা যাবে তাদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে আইইডিসিআরে নিয়ে যাবেন তাদের এই প্রতিনিধি দল।

মঙ্গলবার পর্যন্ত গাইবান্ধার সাত উপজেলায় বিভিন্ন দেশ থেকে আসায় নিজ বাড়ির হোম কোয়ারেন্টিনে ২২৬ জনকে রাখা হয়েছে বলে সিভিল সার্জন জানান।