এবার রাঙামাটিতে ৫ শিশুর মৃত্যু, অসুস্থ ‘আরও একশ’

রাঙামাটি পাহাড়ে হামে আক্রান্ত হয়ে অন্তত পাঁচ শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2020, 07:03 PM
Updated : 19 March 2020, 07:04 PM

বৃহস্পতিবার রাতে এ শিশুদের মৃত্যুর খবর জানিয়ে রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা জানান, সেখানে তিন গ্রামে এখনো হামে আক্রান্ত প্রায় একশ শিশু রয়েছে।

তিনি জানান, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদহে গত এক সপ্তাহে হামে আক্রান্ত এই পাঁচ শিশুরা মারা যায়।

“আমরা জেনেছি দুর্গম ওই এলাকায় হঠাৎ হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হাম থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে।

“আমরা জরুরি মেডিকেল টিম সেখানে পাঠিয়েছি।”

শুক্রবার বিজিবির সহযোগিতায় হেলিকপ্টারে করে বিশেষ আরেকটি মেডিকেল টিম সেখানে যাবে বলে জানান তিনি।

সাধারণত শীত ও বসন্তকালে হাম বেশি হয়। সাধারনত হামে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা নয়ন জানিয়েছেন, সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রাম অরুনপাড়া, নিউথাং পাড়া ও হাইচপাড়ায় গত কয়েক দিনে হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

“এতে মূলত শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই পাঁচটি শিশু মারা গেছে।”

ঘটনা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, তবে দুর্গমতার কারণে তিনিও সময় মত সঠিক খবর পাননি বলে জানিয়েছেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার আহসান হাবিব জিতু বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দুর্গম ও সীমান্তবর্তী শিয়ালদহের তিনটি গ্রামের শিশুদের হামের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাচ্ছিলাম।

“বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানোর সাথে সাথেই তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে গ্রামগুলি খুব দূরে এবং দীর্ঘ পায়ে হাঁটা পথে হওয়ায় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো কঠিন হচ্ছে।”

আয়তনে দেশের সবচে বড় উপজেলা বাঘাইছড়ির সবচেয়ে দুর্গম ইউনিয়ন সাজেক। এ ইউনিয়নের সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ছাড়া বাকি এলাকা অত্যন্ত দুর্গম। সেগুলোর মধ্যে আবার শিয়ালদহ সবচেয়ে দুর্গম বলে বিবেচনা করা হয়।

প্রায়ই সেখানে দুর্গমতার কারণে খাদ্যাভাব ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির ঘটনা ঘটে।

২০১৫ সালের মে মাসে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয় ওই এলাকায় সাতজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া আক্রান্ত আরো ৩০ জন জরুরি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন।

৬০৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সাজেক ইউনিয়নে লোকসংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকা বলে সরকারি জরুরি চিকিৎসা সেবা সেখানে নিয়মিত পৌঁছায় না। 

কয়েক দিন আগে বান্দবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাখায় ম্রো জনগোষ্ঠীর শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের একজন মারাও যায়।