বৃহস্পতিবার বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের কাছে পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মরকলিপি দেন সেখানকার চিকিৎসকরা।
শুধু সেখানেই নয় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা তাদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা তিন ঘণ্টা কর্মবিরতিও পালন করেন।
স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট বা পিপিই) জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকাতে কাজে দেয়। এসব উপকরণের মধ্যে রয়েছে-প্রতিরোধমূলক পোশাক, হেলমেট, গ্লাভস, বিশেষ ধরনের চশমা, মুখের মাস্ক এবং অন্যান্য বিশেষভাবে তৈরি উপকরণ, যেগুলো জীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।
হাসপাতালগুলোয় এসব উপকরণ এখনও না পৌঁছানোয় কয়েকটি আতঙ্কের মধ্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলে কয়েকটি জেলার হাসপাতাল থেকে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে দেশে এতে আক্রান্ত সত্তরোর্ধ্ব বয়সী একজনের মৃত্যুর খবরও দেন তারা; যিনি বিদেশফেরত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
অন্যদিকে, বিশ্বের ১৫৮টি দেশে ২ লাখ ১৮ হাজার মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; মৃতের সংখ্যা ৮৮০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে তথ্য দিয়েছে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
সংক্রমণ রোধে জনসমাগম কমাতে এরইমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্রসহ কোথাও কোথাও বাস চলাচলও বন্ধ হয়েছে। দর্শনার্থীদের এ পরিস্থিতি আর সচিবালয়ে ঢুকতে দেবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আন্তঃবিভাগ চিকিৎসক পর্ষদের সভাপতি সুদীপ কুমার হালদার বলেন, প্রতিদিন জ্বর, হাঁচি, কাশিসহ নানা সংক্রমণ নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন।
“কোন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই তাদের ভর্তি করা হচ্ছে। এর ফলে চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই পাঁচ দফা দাবিতে তারা স্মরকলিপি দিয়েছেন।”
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রত্যেক চিকিৎসকের জন্য পিপিই সরবরাহ করতে হবে, দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসকদের শূন্য পদ পূরণ, শুধুমাত্র উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন রোগীদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা এবং সাময়িক সময়ের জন্য সব ধরনের সভা, সেমিনার ও বায়োমেট্রিক হাজিরা বন্ধ করা।
বরিশাল বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, মাস্ক, গ্লাভস ও রেইনকোট জোগাড় করে তাদেরকে তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
“পিপিই ছাড়া সেবা দেওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের জেলায় যে পাওয়া যাবে না এমনটা তো বলা যায় না। আমরা বিদেশ থেকে আসা যে লোকটাকে পরীক্ষা করছি, তার মধ্যে যে নভেল করোনাভাইরাস নেই সেটা তো আমরা বুঝতে পারছি না। সেক্ষেত্রে একটা ভয়ের জায়গা থেকে যায়।”