লক্ষ্মীপুরে বিপুল গণজমায়েতে করোনাভাইরাস মুক্তির দোয়া

নভেল করোনাভাইরাস অতি মাত্রায় সংক্রামক হওয়ায় এর বিস্তার ঠেকাতে জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করা হলেও লক্ষ্মীপুরে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে এই রোগমুক্তির দোয়া করলেন।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2020, 12:50 PM
Updated : 18 March 2020, 03:33 PM

বুধবার ফজরের নামাজ শেষে রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ তাহেরিয়া রচিমউদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ ময়দানে ‘খতমে শেফা’ অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলার হায়দরগঞ্জ সাইয়্যেদ মঞ্জিল আয়োজিত বিশেষ এই মোনাজাত পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব সাইয়্যেদ মো. আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবিরী আল-মাদানী।

মোনাজাতে মহামারী রূপ ধারণ করা করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য বিশ্ববাসীর কল্যাণ কামনা করা হয়।

তবে এ জমায়েত অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

বিশ্বের দেড়শ’র বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অনেক দেশ সীমান্ত বন্ধ করার পাশাপাশি নিজের দেশে মানুষের চলাচল পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরোলে জরিমানাও করা হচ্ছে।

জনসমাগম ঠেকাতে সৌদি আরবে মক্কা ও মদীনার বড় দুই মসজিদ ছাড়া সারা দেশের সব মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় বন্ধ করা হয়েছে। তাদের আগে এই ব্যবস্থা নিয়েছে আরেক আরব দেশ কুয়েত। সেখানে আযান পাল্টে ঘরে বসে নামাজ পড়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে মসজিদের মাইক থেকে।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশেও প্রথম নভেল করোনাভাইরাস রোগী ধরা পড়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে জনসমাগম সীমিত করতে বলা হয়।

এরপর এই রোগে আরও কয়েকজন আক্রান্ত হওয়ার পর সারা দেশে ওয়াজ মাহফিলসহ সব ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তারপরেও কীভাবে এই জমায়েত হল জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, “আমরা কোনো সভা সমাবেশ ও মাহফিলের পারমিশন দেয় নাই। তারা কীভাবে এটা করল জানি না। বিষয়টি জানার পর রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাকে র্নিদেশ দিয়েছি যারা এটার আয়োজন করছেন তাদের ডেকে কারণ দর্শানোর জন্য।”

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার এএইচ কামরুজ্জামান বলেন, তারা এ বিষয়ে ‘কিছু জানতেন না’।

“আর এটা কোনো মাহফিল ছিল না। করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য ফজরের নামাজের পর মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন লোকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ফজর নামাজের আগে এখানে মানুষ জমায়েত হতে থাকে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরো ঈদগাহ ও আশপাশ এলাকা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ সময় সবাই দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঈদগাহ ময়দানের খতিব সাইয়্যেদ মো. জাহেদ ইজ্জুদ্দীন জাবেরী আল-মাদানী, পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কাজী জামসেদ কবির বাক্কী বিল্লাহ, হায়দরগঞ্জ তাহেরিয়া আর এম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মজুমদার, হায়দরগঞ্জ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ফজলুল হক প্রমুখ।

স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বেলায়তে হোসেন বলেন, ফজরের নামাজ থেকে সকাল ৭টা র্পযন্ত ‘খতমে শেফা’ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। তারা আগে এ জমায়েত সম্পর্কে কিছু জানতেন না।

রায়পুর থানার ওসি তোতা মিয়া বলেন, তারাও এ বিষয়ে আগ থেকে ‘কিছু জানতেন না’।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইয়্যেদ তাহের জাবেরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।