মঙ্গলবার সকালে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার পলাশীতে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত ইকলাস হোসেন নয়ন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের আবু হানিফের ছেলে। তিনি বাল্যকাল থেকে সদর উপজেলার রুদ্রপুরে নানা বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতেন। তিনি রুদ্রপুর কলেজের এবারের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ছিলেন।
এ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মৃদুল মণিরামপুর উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। তিনি পলাশী কলেজ থেকে এবারের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ছিলেন। মেয়েটিসহ তাদের সবাই এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
মণিরামপুর থানার ওসি মতিয়ার শিকদার জানান, পলাশী স্কুলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে-রাস্তা থেকে নয়নকে তার বন্ধু মৃদুল ধরে টানতে টানতে স্কুলের প্রাচীরের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে বেধড়ক মারপিটের এক পর্যায়ে মৃদুল নয়নের মাথা ধরে দেওয়ালে আঘাত করতে থাকে।
“এ সময় নয়ন অচেতন হয়ে পড়লে শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃদুল লাশ টানতে টানতে প্রাচীরের বাইরে মসজিদের সামনে ফেলে চলে যায়।”
মণিরামপুরের খেদাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সালাহ উদ্দিন জানান, “মৃদুলের সাথে কলেজের এক ছাত্রীর প্রেম ছিল। বছরখানেক যেতে না যেতেই ওই ছাত্রীর সঙ্গে মৃদুলের সম্পর্কের অবনতি হয় কিন্তু ওই ছাত্রীর সাথে নয়নের বন্ধুত্ব অব্যাহত থাকে। এ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়।”
নয়নের নানা আয়হার আলী বলেন, নয়ন, মৃদুল ও ওই ছাত্রী একই শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ত। সেই সূত্রে ওদের পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। মৃদুলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল তবে কয়েক দিন আগে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। অন্যদিকে নয়নের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
কয়েকদিন আগে তার নাতিদের একটি ‘ঝামেলা মেটাতে গিয়ে’ তিনি এসব সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন বলে জানান।
ঘটনার দিনের বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে নয়ন পাশের মনিরামপুরের বাসুদেবপুর গ্রামের শিক্ষক ইব্রাহিম হোসেনের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে বের হয়।
“সকাল ৭টার দিকে পলাশী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মসজিদের সামনে নয়নের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী তাকে খবর দেয়।”
এ হত্যাকাণ্ডে নিহত নয়নের নানা আয়হার আলী বাদী হয়ে মৃদুলকে প্রধান আসামি করে আরো তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
তবে পুলিশ ঘাতক মৃদুলসহ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।