ফরিদপুরে মশার উপদ্রবে আতঙ্কে শহরবাসী

ফরিদপুর শহরে মশার উপদ্রব বেড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক দেখা দিয়েছে; কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না শহরবাসীর অভিযোগ।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2020, 08:45 AM
Updated : 16 March 2020, 08:57 AM

শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তাদের এই আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন।

মুজিব সড়কের ওষুধের দোকানি নিশান মাহমুদ বলেন, “নতুন ড্রেনের কাজ হচ্ছে। কিন্তু ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানি পরিষ্কার করা হয়নি। মশা ডিম ছাড়ছে। সামনেই ডেঙ্গুর সিজন। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। মশার উপদ্রবে জনমনে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে।”

শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের পাশে নর্দমা ও ডোবাসহ নানা জায়গায় জমে থাকা পানিতে মশার বিস্তার ঘটছে। রাস্তার পাশে খোলা জায়ঘায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে মশার বংশ বিস্তার করছে।

ভাঙা রাস্তা মোড়ের অটোরিকশা চালক মো. মহসিন শিকদার বলেন, “ময়লার ড্রেনগুলোতে মশার কারখানা। পৌরসভা কোনো ওষুধই দেয় না। এখান থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ নানা প্রকার রোগবালাই ছড়াচ্ছে। আমরা আতঙ্কে আছি।”

আলফাডাঙ্গা কামারগ্রাম আদর্শডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, “এবার শুস্ক মৌসুম শুরু না হতেই মশার উপদ্রব একটু বেশিই মনে হচ্ছে। ফাল্গুনের শুরুতে সামান্য যে বৃষ্টি হয়েছে তাতে অনেক স্থানে পানি জমে গেছে। সেই পানিতে এরই মধ্যে বংশ বিস্তার করছে মশা।”

মশা নিধনে পৌর কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।

ঝিলটুলী এলাকার বাসিন্দা এনামুল খন্দকার বলেন, “সন্ধ্যা হলেই বাসাবাড়ির দরজা-জানালা আটকে ঘরে বসে থাকি, কয়েল জ্বালাই, মশার ওষুধ স্প্রে করি। তার পরও মশা কমে না। মেয়র মশা নিধনে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। মশা নিধনে ব্যবস্থ্যা না নিলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি গত বছরের চাইতে ভয়াবহ হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। সবাই আতঙ্কে রয়েছে।”

পূর্ব খাবাসপুর এলাকার জিয়াউল হাসান বলেন, “এখনও  মশার ওষুধ ছিটাতে দেখি নাই। আর পৌরসভা এর আগের বছর নামকাওয়াস্তে যে ওষুধ ছিটাল তাতে কিন্তু মশা মরে নাই। আমরা এসব চাই না। আমরা চাই যাতে মশার উপদ্রব বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

অভিযোগ বিষয়ে মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, “আমার শহরকে পরিষ্কার রাখার জন্য কাজ করছি। এমকি নিয়মিত এ বিষয়ে মাইকিং চলছে। শুধু ফগার মেশিন দিয়ে নয়, ড্রেনগুলোতে মশা মারার ওষুধ দিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে।

“ফরিদপুর পৌরসভার আয়তন ছিল নয়টি ওয়ার্ডের। এখন বেড়ে ২৯টি ওয়ার্ড হয়েছে। এই বিশাল এলাকার মশা নিধনে রয়েছে মাত্র পাঁচটি ফগার মেশিন। তার তিনটিই বিকল।”

 গত বছরের ডেঙ্গু  পরিস্থিতি সম্পর্কে মেয়র বলেন, “গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। আর সারা জেলায় প্রায় চার হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়।”