সাংবাদিককে তুলে নিয়ে জেল-জরিমানা: তদন্ত কমিটি গঠন

কুড়িগ্রামে গভীর রাতে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে জেল-জরিমানা করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। এছাড়া এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম ও রংপুরের সাংবাদিকরা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2020, 02:38 PM
Updated : 14 March 2020, 02:38 PM

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকের সমালোচনা করে সংবাদ প্রকাশের ১০ মাস পর মাদক রাখার অভিযোগে আরিফুল ইসলাম রিগান নামে এই সাংবাদিককে শুক্রবার গভীর রাতে তুলে নিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা এ অভিযান পরিচালনা করেন।

রিগান বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।

এ ঘটনায় এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। কমিটির সদস্য রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (রাজস্ব) মো. মাসুদ রানা।

মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আইনসংগত হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাসহ কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া রিগানের বাড়িতে সরজমিন গিয়ে তার স্ত্রী নিতু, শ্বশুর মোহাম্মদ আলী, মামা নজরুল ইসলাম ও নূর ইসলামসহ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন নিজের নামানুসারে ‘সুলতানা সরোবর’ নামকরণ করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ করেছিলেন আরিফুল ইসলাম।

গত বছরের ১৯ মে ‘কাবিখা’র টাকায় পুকুর সংস্কার করে ডিসি’র নামে নামকরণ!’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ হয় বাংলা ট্রিবিউনে। তবে শেষ পর্যন্ত সেই নামকরণ করা হয়নি।

আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর একটি দল তাদের বাড়ি গিয়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে। অনেকক্ষণ ধাক্কাধাক্কির পর তিনি দরজা খুলে দেন।

তিনি বলেন, এরপর ১৪/১৫ জন লোক ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে মারধর ও টানা-হেঁচড়া করে। একই সময় কিছু লোক এঘর-ওঘর হাঁটাহাঁটি করেছে। পরে মারতে মারতে আরিফুলকে বের করে নিয়ে যায়।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম ও রংপুরের সাংবাদিকরা।

শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম শহরের শাপলা চত্বরে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা সাংবাদিকরা। কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, আতাউর রহমান বিপ্লব, সাংবাদিক রাজু মোস্তাফিজ, হুমায়ুন কবির সূর্য, ছানালাল বকসী, শ্যামল ভৌমিক, দুলাল বোস বক্তব্য দেন।

এ ঘটনায় রংপুরের সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

শনিবার রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম আলমগীর, সদস্যসচিব রতন সরকার, একুশে টেলিভিনের রংপুর প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদল, সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রংপুর প্রতিনিধি আফতাবুজ্জামান হিরু, ডিবিসি রংপুর অফিস পধান নাজমুল ইসলাম নিশাদ, চ্যানেল ২৪ রংপুর অফিস প্রধান ফকরুল শাহীন, রংপুর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জীবন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান শাহীদ, সময় টিভির রংপুর অফিসের স্টাফ রিপোর্টার বাবু, বাংলানিউজ২৪ রংপুর প্রতিনিধি বকুল, দৈনিক পরিবেশ স্টাফ রিপোর্টার আল-আমিনসহ সাংবাদিক নেতারা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানান।