করোনাভাইরাস: আট জেলায় বিদেশফেরতসহ ৮০ জন পর্যবেক্ষণে

করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে বিদেশ থেকে আসাসহ ৮০ জনকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2020, 12:43 PM
Updated : 11 March 2020, 05:31 PM

এদের মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জে ৪২ জন, মাদারীপুরে ৩০ জন, জামালপুরে একজন, যশোরে এক দম্পতি, নীলফামারীতে একজন, শেরপুরে একজন, বগুড়ায় দুইজন ও দিনাজপুরে একজন।  

বুধবার এসব জেলার সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভৈরবে ৩৭ জনসহ জেলায় ৪২ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

জেলার সিভিল সার্জন মো. মুজিবুর রহমান বলেন, সদর উপজেলায় তিনজন এবং নিকলী উপজেলায় দুইজনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়েছে। এদের প্রায় সবাই বিদেশফেরত হওয়ায় সতর্কতা হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

“তাদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘরের নির্দিষ্ট কক্ষে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। ব্যতিক্রম হলে পুলিশের শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ রয়েছে।”

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকা ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ইতালি থেকে আসা। তাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘরের নির্দিষ্ট কক্ষে থাকতে হবে।

এদিকে, বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি, কিশোরগঞ্জের এক মত বিনিময় সভা হয়েছে।

সিভিল সার্জন মো. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং জেলার একটি সরকারি ও দুইটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মুজিবুর রহমান জানান, সভায় করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিশেষভাবে জেলার সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ তিনটিতে কোয়ারেন্টিন ইউনিট ও আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখার বিষয়টি আলোচিত হয়।

“ইতিমধ্যেই শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে একশত শয্যার কোয়ারেন্টাইন ইউনিট এবং ১৫ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।”

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও সিভিল সার্জন জানান।

মাদারীপুর

মাদারীপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তার জেলায় ৩০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে (পৃথক করে রাখা) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে দিল্লি ফেরত একজন জ্বর-কাশিসহ কিছুটা উপসর্গ নিয়ে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে রাতে তাকে হোম কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়।

এছাড়া বাংলাদেশে যে তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন তাদের একজনের বাড়ি মাদারীপুরে। কয়েক সপ্তাহ আগে ইতালি থেকে দেশে আসার পর ২৯ জন মানুষ তার সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাদের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টানে রাখার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

এদিকে মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের নতুন ভবনে একশ শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও সদর হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দুটি কেবিনের চারটি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে।

একই সঙ্গে প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইটি করে বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা  পর্যায়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রধান করে কমিটি করা হয়েছে।

জামালপুর

ইরান থেকে আসা এক ব্যক্তিকে তার জামালপুরের বাড়িতে পর্যবেক্ষণে (কোয়ারেন্টিন) রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

তবে ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জামালপুরের সিভিল সার্জন গৌতম রায় বলেন, ৩২ বছর বয়সের ওই ব্যক্তি সোমবার সন্ধ্যায় ইরান থেকে বিমানে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ওই রাতেই তিনি ঢাকা থেকে জামালপুর সদরের শরিফপুর বাজারে গ্রামের বাড়ি চলে যান।

“বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা তার বাড়িতে যান। তার শরীরে জ্বর বা সর্দি না থাকলেও বিদেশ ফেরৎ হিসেবে বাড়িতে পরিবারের কোনো সদস্যের সংস্পর্শ ছাড়া অন্তত দুই সপ্তাহ আলাদা ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

প্রতিদিন একজন করে স্বাস্থ্যকর্মী তার পর্যবেক্ষণে থাকবেন বলে জানান সিভিল সার্জন।

এর আগে মালয়েশিয়া ফেরত ৪৫ বছর বয়সের আরেক ব্যক্তি গত রোববার ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামেন। রোববারই তিনি ঢাকা থেকে সরাসরি মেলান্দহের গ্রামের বাড়িতে যান। বাড়ি যাওয়ার পর সোমবার সকালে শরীরে জ্বর ও কাশির উপসর্গ দেখা দেয়। এরপরই তিনি মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যান।

এদিকে বেশি দামে মাস্ক-গ্লাভস বিক্রি করায় নানা স্থানে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। চাঁদপুরে হাসপাতালে ভর্তি ইতালিফেরত একজনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

যশোর

যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ইতালিফেরত এক দম্পতির স্বজনরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও বাড়তি সতর্কতার জন্য ওই পরিবারের সব সদস্যকে নিজ বাড়িতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার বলেন, ইতালিফেরত ওই দম্পতি সরাসরি চৌগাছার বাড়িতে এসেছেন, তাই পরিবারের সকলকে আমরা ১৪ দিনের জন্য ‘কোয়ারেন্টিনে’ (পর্যবেক্ষণ) রেখেছি। তবে তাদের মধ্যে কেউ করোনভাইরাসে আক্রান্ত নন।”

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ইতালিফেরত ওই দম্পতি নিজ বাড়িতে একদিন থাকার পর ঝিনাইদহে চলে গেছেন। তারা যেহেতু ইতালি থেকে চৌগাছার বাড়িতে এসেছেন, তাই বাড়তি সতর্কতার জন্য ওই দম্পতির স্বজনদের আমরা নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি। তবে তারা সবাই সুস্থ। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।”

নীলফামারী

চীন থেকে আসা নীলফামারীর ৩৫ ব্যক্তি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৪ জনের ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ শেষ হয়েছে। বর্তমানে নিজ বাড়িতে একজন পর্যবেক্ষণে (কোয়ারেন্টিন) রয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।

বুধবার জেলার সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, “চীন থেকে এপর্যন্ত ৩৫ জন এ জেলায় ফিরেছেন। তাদের নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। ৩৪ জনের কোয়ারেন্টিন সময় পার হয়েছে। তাদের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের  লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তারা বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন “

তিনি আরও বলেন, “১ মার্চ থেকে এক জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত তার শরীরেও কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।”

স্বাস্থ্যকর্মীরা এসব ব্যক্তির নিয়মিত দেখা শোনা করছেন বলে তিনি জানান।

নিজ বাড়িতে পর্যেবেক্ষণে থাকা ওই যুবক জানান, তিনি চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। করোনাভাইরাস সম্পর্কে তিনি সচেতন।

“গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে এসে ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়িতে অবস্থান করছি। এর মধ্যে কোয়ারেন্টিনের সময় প্রায় শেষ। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কয়েক দফায় বাড়িতে এসেছিলেন। ফোনে বিভিন্ন সময় খোঁজ খবর নিয়েছেন।”

শেরপুর

ইতালি থেকে আসা এক ব্যক্তিকে তার শেরপুরের বাড়িতে পর্যবেক্ষণে (কোয়ারেন্টিন) রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

শেরপুরের সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, ২১ বছর বয়সের ওই ব্যক্তি রোববার ইতালি থেকে বিমানে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ওই দিনই তিনি ঢাকা থেকে শেরপুর উপজেলার সোনাবরকান্দা তাতালপুরের গ্রামের বাড়ি চলে আসেন।

“বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা তার বাড়িতে গিয়ে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার শরীরে জ্বর বা সর্দি না থাকলেও বিদেশ ফেরৎ হিসেবে বাড়িতে পরিবারের কোনো সদস্যের সংস্পর্শ ছাড়া অন্তত দুই সপ্তাহ আলাদা ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

প্রতিদিন একজন করে স্বাস্থ্যকর্মী তার পর্যবেক্ষণে থাকবেন বলে জানান ওই মেডিকেল অফিসার।

বগুড়া

করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে বগুড়ায় বিদেশফেরত দুই ব্যক্তিকে বাড়ির ভেতর থাকতে বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদের মধ্যে বগুড়া সদরের একজন ৭ মার্চ ইতালি থেকে এবং সোনাতলা উপজেলার একজন ৮ মার্চ কুয়েত থেকে ফেরেন।

বগুড়ার সিভিল সার্জন মো. গাওসুল আজিম চৌধুরী জানান, বিদেশফেরত দুই জনকে কোয়ারেন্টিনে তাদের বাসায় রাখা হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৪ শয্যা, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৪৫ শয্যা, টিএমএসএস মেডিকেলে ২০ শয্যা ও শাজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫৫ শয্যাসহ প্রতিটি হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে ২টি করে বেড সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

এদিকে, হিলি স্থলবন্দরে মেডিকেল পরীক্ষা ছাড়া কাউকে ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগ।

বাংলাদেশ হিলি স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ওসি সেকেন্দার আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা নাগরিকদের শারীরিক পরীক্ষা করেই এপার-ওপার করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের উদ্বেগের মধ্যেও মানুষের যাতায়াত কমেনি।

হিলি ভারত সীমান্তের ইমিগ্রেশন ওসি শিপ্রা রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়া নাগরিকদের মেডিকেল পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিনা পরীক্ষায় কেউ আসতে এবং যেতে পারবে না।

বাংলাদেশ হিলি হাকিমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার নাজমুস সাঈদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পর্যায়ক্রমে দুটি টিম কাজ করছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পালাক্রমে কাজ করছে।

“জর, কাশি, সর্দি অসুস্থ থাকা লোকদের আমরা বিশেষভাবে পরীক্ষা করছি। এখন পর্যন্ত শুধু চীনফেরত একজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস নিশ্চিত না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব শুধু সন্দেহভাজনদের আইসোলেশনে রাখা। নিশ্চিত করবে ঢাকার আইইডিসিআর।”

দিনাজপুর

দিনাজপুরে চীন ফরত এক শিক্ষার্থীকে করোনাভাইরাস সন্দেহে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে থাকার পর বুধবার বিকালে তার নমুনা সংগ্রহ করেছে জাতীয় রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) একটি দল।

চীন থেকে দিনাজপুরে নিজ বাড়িতে আসার ১০ দিনের মাথায় ওই শিক্ষার্থী জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

দিনাজপুর শহরের বাসিন্দা ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা জানান, চীনের জেজিয়াং প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি চীন থেকে মালয়েশিয়া হয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দিনাজপুরের বাড়িতে আসেন।

দিনাজপুরের সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দুছ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চীনফেরত ওই ছাত্রের জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর মঙ্গলবার সিভিল সার্জন অফিসের একটি মেডিকেল টীম ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে পরিদর্শন করেছে।

“এরপর বিষয়টি জাতীয় রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) জানানো হয়। আইইডিসিআর-এর দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি টীম বুধবার বিকেল ৩টায় ওই শিক্ষার্থীর নমুনা সংগ্রহ করেছে।”

বরিশাল

বেশি দামে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস বিক্রি করার অভিযোগে বরিশালে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত তিন দোকান থেকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে।  

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরীর কাটপট্টি, জেলাখানার মোড় ও নতুন বাজারে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোমানা আফেরোজ বলেন, করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার থেকে অভিযানে নামে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তিনি জানান, ৩০ টাকা মূল্যের হ্যান্ড গ্লাভস ৫০ টাকায় বিক্রি করায় কাটপট্টি এলাকার সার্জিক্যাল এণ্ড সাইন্টিফিক স্টোর্সকে ২০ হাজার টাকা, ২০ থেকে ৩০ টাকা মূল্যের মাস্ক একশ থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি করায় জেলখানা মোড়ের ওষুধের দোকান বিষ্ণুপ্রিয়াকে ৩০ হাজার ও নতুন বাজারে সাইট নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জ

মাস্ক মজুদ ও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ১০ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার দুপুরে র‌্যাব-১২-এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র সহকারী পরিচালক এমএমএইচ ইমরান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুরে উল্লাপাড়া উপজেলার শ্যমলীপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় র‌্যাবের টিমের সহায়তায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খানের নেতৃত্বে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

অভিযানকালে অবৈধভাবে মাস্ক মজুদ ও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ মূল্যে মাস্ক বিক্রির অভিযোগে ১০ ব্যবসায়ীর প্রত্যেকের কাছ পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

জরিমানা দিয়েছেন ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, মো. নাছিম, আনিছুর রহমান, মো. জহুরুল ইসলাম, আব্দুল গফুর, আলাউদ্দিন সুমন, কোরবান আলী, আব্দুল হাকিম ও সোহেল রানা।

সুনামগঞ্জ

মাস্কের দাম বেশি রাখায় সুনামগঞ্জ শহরে পাঁচটি গার্মেন্টসকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর।

বুধবার সন্ধ্যায় এই অভিযান চালানো হয় বলে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম জানান।

ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম বলেন, মাস্কের দাম বেশি রাখার খবর পেয়ে শহরের হকার্স মার্কেট ও ডিএস রোড এলাকায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

“এ সময় মাস্কের দাম বেশি রাখার বিষয়টি সত্যতা পেয়ে সুফিয়া গার্মেন্ট এন্ড এম্পোরিয়াম, ম্যানস ওয়াল্ডসহ ৫টি গার্মেন্টকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।”

ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

এ সময় জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

চাঁদপুর

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি ইতালিফেরত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

বুধবার দুপুরে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুসরাত জাহান মিথেন বলেন, “ওই ব্যক্তির শরীর থেকে জ্বর নেমে গেছে। বন্ধ হয়েছে পাতলা পায়খানাও। এখন স্বাভাবিক খাবারও খাচ্ছেন তিনি।”

ডা. নুসরাত জানান, এর আগে গত সোমবার বিকালে ইতালি থেকে গ্রামের বাড়ি আসা ৬০ বছরের এই বৃদ্ধকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই সময় তার জ্বর এবং পাতলা পায়খানা ছিল।

“তখন তাকে আলাদা একটি ইউনিটে নিয়ে রেখে বিষয়টি তাৎক্ষণিক আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে। সোমবার রাতেই ওই বৃদ্ধের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন রোগতত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একজন টেকনোলজিস্ট।”

তিনি জানান, এই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তার শরীর থেকে জ্বর নেমে গেছে এবং পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়েছে। এখন স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন তিনি। ঢাকা থেকে আইইডিসিআর-এর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

গত বৃহস্পতিবার ইতালি থেকে বাংলাদেশে ফিরেন ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধ।