ফেনীতে ‘ভুল অস্ত্রোপচারে’ প্রসূতির মৃত্যু

ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসক-পরিচালকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2020, 06:22 AM
Updated : 8 March 2020, 06:22 AM

সদর থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন জানান, শনিবার রাতে শহরের শহিদ শহিদুল্লা কায়সার সড়কে ‘চিশতিয়া মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে’ ফারহানা আক্তার (২১) নামে এই প্রসূতির অস্ত্রোপচার হয়।

ফারহানা জেলার দাগনভুঁঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বেপারী বাড়ির মো. জুলহাসের স্ত্রী।

নিহত ফারহানার খালা কুলসুম আক্তার বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য শনিবার বিকেলে ফারহানাকে তার মা ওই হাসপাতালে নিয়ে যান। সন্ধ্যায় তার অপারেশন হয়।

“কিন্তু ডাক্তার তার পেট কাটার পর সন্তান বের করতে পারেননি। তখন ডাক্তাররা তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। চট্টগ্রাম নেওয়ার পথে ফারহানা নিহত হয়।”

চিকিৎসক নাসরিন আক্তার শিমু এই অপারেশন করেন বলে তিনি জানান। হাসপাতালে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের অবেদনবিদ খুরশিদ আলম বলেন, তিনি রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দিলে চিকিৎসক নাসরিন আক্তার শিমু অপারেশন করেন।

“ডাক্তার কিভাবে অপারেশন করেছেন আমার জানা নেই। রোগী কী কারণে মারা গেছেন তাও আমি জানি না।”

রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করলে পুলিশ আসে।

ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ রায় বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর পর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

“ততক্ষণে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গা ঢাকা দেন। এ সময় ফারহানা আক্তারের রিলিজপত্রটি হাসপাতালের একটি কক্ষের মেঝে থেকে ছেঁড়া অবস্থায় জব্দ করে পুলিশ।”

ফেনীর সিভিল সার্জন সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রসূতির মৃত্যুর খবর পেয়েছেন তিনি। চিশতিয়া হাসপাতালের ১১ রোগীকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত ফারহানার মা জাহানারা আক্তার তিনজনকে আসামি করে রাতে থানায় মামলা করেছেন বলে ওসি আলমগীর জানিয়েছেন।

আসামিরা হলেন- ওই হাসপাতালের চিকিৎসক নাসরিন আক্তার শিমু, পরিচালক সাবেক পৌর কাউন্সিলর মনির হোসেন ও অফিস সহকারী কনকচন্দ্র নাথ।

ওসি আলমগীর বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই ফেনী সদর হাসপতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে।