কুমিল্লায় কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণ, দুই হোতা গ্রেপ্তার

কুমিল্লায় এক কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণে জড়িতের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2020, 06:18 PM
Updated : 6 March 2020, 06:18 PM

শুক্রবার দুপুরে নগরীর শাকতলা র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ কুমিল্লা উপ-পরিচালক কোম্পানি অধিনায়ক মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব এ কথা জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আলমগীর হোসেন আকাশ জেলার হোমনা উপজেলার জয়পুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এবং জুয়েল রানা একই গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে।

তালুকদার নাজমুছ সাকিব বলেন, আকাশের কাছ থেকে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে যেটার মধ্যে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র পাওয়া গেছে।

গত বুধবার রাতে জুয়েলকে কুমিল্লা সদরের আলেখার চর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কিশোরীটিকে দলবেঁধে ধর্ষণের কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কথা স্বীকার করেছে জুয়েল রানা।

র‌্যাব অধিনায়ক মেজর সাকিব জানায়, দলবেঁধে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি জুয়েল রানাকে (২৩) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।

“জুয়েল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে ধর্ষণের ঘটনায় তার সহযোগী ও অন্যান্য ধর্ষকদের নাম প্রকাশ করলে র‌্যাব আলমগীর হোসেন আকাশকে (১৯) বৃহস্পতিবার ভোররাতে জেলার হোমনার জয়পুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে।“

মামলার বিবরণ ও র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই কিশোরীকে গ্রামের একটি ওরস থেকে ফেরার পথে জুস খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় জুয়েল রানা। একটি ফাঁকা ঘরে রাতভর দলবেঁধে ধর্ষণের পর অজ্ঞান অবস্থায় ওই কিশোরীকে স্থানীয় এক দীঘিরপাড়ে ফেলে রেখে যায় তারা। পরদিন সকালে স্থানীয়রা মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে দিয়ে আসে।

এদিকে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মেয়েটির মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

জুয়েলের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি জুয়েল ও আকাশ অন্যান্য সহযোগীদের সাথে পরামর্শক্রমে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। এর আগে গত ২/৩ মাস ধরে ওই কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে আসছিল জুয়েল। এর সূত্র ধরে তিনি প্রায়ই তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন।

আরও জানায়, ২৩ ফেব্রুয়ারি জুয়েল ওই কিশোরীকে মোবাইল ফোনে দেখা করার জন্য বলে। ওই দিন রাতে কিশোরীটি তার দুই বোনসহ স্থানীয় ফকির বাড়িতে ওরশে যায়। ওরশ থেকে রাত আনুমানিক ১০ টায় বাড়ি ফেরার পথে জুয়েল রানা কথা বলার অজুহাত দেখিয়ে ভিকটিমকে তার বোনদের থেকে আলাদা করে স্থানীয় আরিফুল ইসলামের পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়।

সেখানে মাদ্রাসা ছাত্রী ওই কিশোরীকে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশেয়ে খাইয়ে দেয়। পরে জুয়েল ও তার সঙ্গীরা রাতভর ওই কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে মোবাইলে তা ভিডিও করে। ভোররাতে কিশোরীকে রাস্তার পাশে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

র‌্যাব অধিনায়ক মেজর সাকিব জানায়, এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া চলছে।