মঙ্গলবার বিকালে পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিন এ আদেশ দেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নাকচ করেন জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান।
আদেশের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও আইনজীবীদের বিক্ষোভের মধ্যে মো. আব্দুল মান্নানের বদলির আদেশ আসে এবং তিনি তার দায়িত্ব ২য় যুগ্ম জেলা জজ নাহিদ নাসরিনকে হস্তান্তর করেন।
পরে আসামিপক্ষ আগের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
দুদকের আইনজীবী মনসুর উদ্দিন হাওয়লাদার বলেন, আউয়ালের বিরুদ্ধে জেলার নাজিরপুর থানার সামনে ও উপজেলা সদরের ভূমি অফিসের পেছনের সরকারি জমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি জানান, এই অভিযোগে গত ৩০ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর আউয়ালের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন। এর একটিতে তার স্ত্রী লায়লা পারভীনকেও আসামি করা হয়। এসব মামলায় তারা গত ৭ জানুয়ারি হাই কোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পান।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন আবেদন নাকচ হলে আদালত পাড়াসহ পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদালত পাড়াসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ উত্তেজিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে।
এ সময় জেলা জজ মো. আব্দুল মান্নানের অপসারণ দাবি করে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন এবং সাংবাদিকদের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জনেরও ঘোষণা দেন। এর আগে আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মুনসুর উদ্দিন আহমেদ বলেন, “শুনেছি জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল মান্নানকে আইন মন্ত্রণালয় আজই বদলি করেছে। এরপর যুগ্ম জেলা জজ নাহিদ নাসরিন দায়িত্ব পেয়েছেন।”
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক খান পান্না বলেন, “সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়ালের বিরুদ্ধে দুদক যে মামলা করেছে তাতে কোনো ক্রিমিনাল অফেন্স না থাকায় আমরা জামিনের আবেদন করি।”
“এরপর আসামিপক্ষ মেডিকেল ওয়ার্ডে যাওয়ার আবেদন করলে বিচারক তাদের চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দেওয়ার আদেশ দেন।”
শহিদুল হক খান বলেন, এরইমধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নানকে বদলি করা হলে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজের দায়িত্ব পান ২য় যুগ্ম জেলা জজ নাহিদ নাসরিন। এরপর তার আদালতে আগের আদেশের পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়।
“ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিন শুনানি শেষে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভিনকে দুই মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।”
এ কে এম এ আউয়াল ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পরপর দুইবার পিরোজপুর-১ (সদর-নাজিরপুর-নেছারাবাদ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন।