দুর্নীতির দায় ‘দল নেবে না’, কে নেবে প্রশ্ন মেননের

দুর্নীতি করে দলের লোকজন ধরা পড়লেই আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘দায় না নেবার’ ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Feb 2020, 05:29 PM
Updated : 29 Feb 2020, 05:49 PM

শনিবার বিকালে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় চলতি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মেনন বলেন, “যখন কেউ ধরা পড়ে তখন বলেন, দল কোনো দায় নেবে না। তাহলে কে দায় নেবে?

“বনে থাকলে দাপিয়ে বেড়াবেন। আর বনের মধ্যে যখন অন্যায় করে ধরা পড়ে যাবেন তখন বলবেন, ‘দায় নেব না।’ এই দায় নিতে হবে।”

২০১৪ সালে বিদেশে ৭৬ হাজার কোটি টাকা বর্তমানে পাঁচ লাখ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হওয়ার অভিযোগ তুলে পাচারকারীদের পরিচয় প্রকাশের দাবি জানানোর সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন- ‘তাহলে অনেক পরিচিত মুখও দেখা যাবে।’

দুর্নীতি ও টাকা পাচারের পাশাপাশি তিনি বৈষম্যের চিত্রও তুলে ধরেন এ জনসভায়।

মেনন বলেন, “ব্যাংক লুটেরাদের ধরা হয় না। ১১০ কোটি টাকা দিয়ে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাড়ি কেনেন; কিন্তু দুদক এসব নিয়ে কথা বলে না, কথা বলতে রাজি না।”

পাকিস্তানিরা দেশের যত টাকা নিয়ে গেছে সাম্প্রতিক কয়েক বছরে তার চাইতেও বেশি টাকা পাচার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই বাম নেতা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগের মেয়াদের মন্ত্রী মেনন বলেন, “দেশে উন্নয়ন হচ্ছে; কিন্তু বৈষম্যও হচ্ছে পাহাড় সমান।

সরকারি দলের সাথে গাঁটছড়া বাঁধা ১৪ দলের এ নেতা বলেন, “আজকে উন্নয়ন হচ্ছে; কিন্তু বৈষম্য হচ্ছে পাহাড় সমান। আমার মাথাপিছু আয় ১৯০৯ ডলার; কিন্তু যারা দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন তাদের দৈনিক মাথাপিছু আয় এক ডলারেরও কম। এ বৈষম্য কেবলমাত্র অংকের হিসাবে নয়।”

১৯৭৪ সালে চারজন কোটিপতি ছিল উল্লেখ করে মেনন বলেন, “এখন আমাদের কোটিপতির সংখ্যা এক লাখ ২২ হাজার। কেবল কোটিপতি নয়, এরা কোটি কোটি কোটিপতি। ”

২১ দফা দাবি নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি বিভিন্ন জেলায় একের পর এক জনসভা করে আসছে। বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলার পর রাজশাহী বিভাগীয় এই জনসভা করলেন তারা।

জনসভায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, “রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভেতরে উইপোকা ঢুকে পড়েছে। এই দেশে রাজনীতি করে বাড়িতে টাকার গুদাম তৈরি করা যায়। রাজনৈতিক পরিচয়ে যারা বাড়িতে টাকার গুদাম তৈরি করতে পারে তাদের ব্যাপারে দায় কার? শুধু ব্যক্তির অপরাধ নয়।”

রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু সভাপতিত্বে এ জনসভায় আরও বক্তব্য দেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য সাংসদ মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, মাহমুদুল ইসলাম মানিক, কামরুল আহসান প্রমুখ।