গাজীপুরে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বাণিজ্যের’ অভিযোগ

গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে যানবাহন আটকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2020, 05:40 PM
Updated : 26 Feb 2020, 06:11 PM

বুধবার সকালে মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় এসব অভিযোগে মাওনা হাইওয়ে থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহারের দাবিও করেছেন এসব পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

গত পাঁচ মাসে ‘পুলিশের অর্ধশত সোর্স’ দিয়ে এসব অপতৎপরতা বেড়েছে বলেও দাবি করছেন স্থানীয় পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, এ থানায় কয়েক মাস আগে ওসি হিসেবে যোগ দেওয়া মঞ্জুরুল ইসলামের ভাষ্য-মাওনা হাইওয়ে থানার কোন পুলিশ কর্মকর্তা কোন ধরনের ‘বাণিজ্যের সাথে জড়িত নন।

“এরপরও যারা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে, তারা হয়ত কোন অনৈতিক সুবিধা চেয়েছিল যা তাদের দেওয়া হয়নি,” যোগ করেন তিনি।

কেওয়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক নামের এক পরিবহন চালক বলেন, “কেউ যদি অপরাধ করে তাহলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। অথচ হাইওয়ে পুলিশ প্রতিটি ঘটনায় সোর্সের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

“তাদেরকে টাকা দিলে অবৈধ বৈধ হয়ে যায়।”

মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিন জানান, মহাসড়কের পাশের এমসি বাজার সংযোগস্থলের স্ট্যান্ড থেকে পুলিশের এক সোর্স তারটিসহ পাঁচটি গাড়ির চাবি থানায় নিয়ে যান। পরে পুলিশের এক এসআই-কে এক হাজার টাকা করে দিয়ে প্রত্যেকে গাড়ি ছাড়িয়ে নেন তারা।

তিনি বলেন, “সরকারি আইন মেনেই মহাসড়কে গাড়ি চালান। তারপরও টাকার জন্য বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কেও হানা দিয়ে গাড়ি আটক করেন পুলিশ।”

শ্রীপুর-মাস্টারবাড়ী আঞ্চলিক সড়কে গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ির আসাদ মিয়া।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি মাস্টাবাড়ী থেকে এক সোর্সের মাধ্যমে তার গাড়ি জব্দ করেন এক এসআই। পরে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে গাড়ি ছাড়িয়ে আনেন দাবি তার।

আক্তার হোসেন নামের এক সিএনজি চালক জানান, তিন মাস আগে জ্বালানি নিয়ে ফেরার পথে মাওনা চৌরাস্তায় তার গাড়ি আটক করে পুলিশ। অনুনয় বিনয় করলেও সিএনজি ছাড়েননি তারা।

সোর্সের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা চাওয়ার কয়েকদিন পর স্ত্রীর কানের দুল সাড়ে আট হাজার টাকায় বিক্রি করে গাড়ি ছাড়িয়ে আনেন বলে দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় পরিবহণ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, সন্ধ্যা হলেই হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় মাওনা চৌরাস্তার উড়াল সড়ক ঘেঁষে বসে হাজারো ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট। এসব দোকানের কারণে যানজটের কবলে পড়ে পথচারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, মহাসড়কের তিন চাকার যান চলাচলের কোন নিয়ম নেই উল্লেখ করে হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুরের পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান বলেন, এসব যানবাহন মহাসড়ক থেকে পুলিশ আটক করে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে এটাই স্বাভাবিক।

তবে টাকার বিনিময়ে অবৈধ যানবাহন ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাননি দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, “যদি এমন অভিযোগ থাকে, তাহলে লিখিত আকারে দিলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”