ইংরেজির বদলে বাংলায় বিদ্যুৎ বিলের দাবি

‘ভাষার আগ্রাসন রোধ করতে’ বাংলা ভাষায় গ্রাহকদের বিদুৎ বিল দেওয়ার দাবি জানিয়েছে নীলফামারীর এক গ্রাহক।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2020, 02:14 PM
Updated : 24 Feb 2020, 02:14 PM

সোমবার দুপুরে নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব নামের ওই গ্রাহক।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দেয়ালে একটি ব্যানার টানিয়ে একাই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি।

অবস্থান কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে এ দাবি জানিয়ে স্মরকলিপি দেন তিনি। তার কাছ থেকে স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার মো. নাহিদ হাসান নেন।

গোলাম কুদ্দুস বলেন,“পিডিবির বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সর্বস্তরের মানুষ। পিডিবির অধীনে বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিপনন কাজে নিয়োজিত নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি।

“তারা বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিল মাতৃভাষা বাংলায় প্রস্তুত না করে ইংরেজি ভাষায় প্রস্তুত করে গ্রাহকদের দেয়।

“ভাষা আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে ইংরাজি ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎবিলে। সাধারণ মানুষ ওই ভাষা না বোঝার কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে, বাড়ছে জনদুর্ভোগ।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ সভায় বাংলায় ভাষণ দেওয়া এবং বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার তৎপরতার প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, অথচ নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি দেশের সাধারণ মানুষকে দিচ্ছে ইংরাজি ভাষায় বিদ্যুৎবিল।

দেশের সব সরকারি, বেসরকারি, স্বায়িত্বশাসিত দপ্তর, আদালতসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারের জন্য ২০১৪ সালের ১৫ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল উচ্চ আদালত।

২০১৮ সালের ৩০ অগাস্টে উচ্চ আদালতের এ আদেশের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় গ্রাহকদের বাংলায় বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় কিন্তু এখনও সেই তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আগত জলঢাকা উপজেলার কৈমারী গ্রামের কৃষক ওমর বলেন, “দেশের বেশীরভাগ বিদ্যুৎ গ্রাহকই লেখাপড়া কম জানেন। তারা বাংলায় পড়তে জানেন, তবে ইংরেজি বোঝেন না।

বিলের ভাষা বুঝতে না পারায় বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বলে জানান জেলা সদরের কাজিরহাট গ্রামের কৃষক ইলয়াছ হোসেন (৪৮), নাসির উদ্দিন (৭০), আজিজার রহমান (৭০), হাড়োয়া গ্রামের সফিয়ার রহমানসহ (৬২) অনেকে।

এ দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করে নীলফামারী নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওশাদ আলম বলেন,“বিলটি ইংরেজির পরিবর্তে বাংলায় প্রস্তুত করা হলে সব গ্রাহকের বুঝতে সুবিধা হবে। বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।”

নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার মো. নাহিদ হাসান বলেন, “এটি একটি যৌক্তিক ও সময় উপযোগী দাবি।”