এবার রাবির ভাষাশহীদের ব্যানারে বীরশ্রেষ্ঠের ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশের পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ব্যানারে মুক্তিযুদ্ধে সাত বীরশ্রেষ্ঠের ছবি ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিশফিকুল ইসলাম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2020, 05:19 PM
Updated : 22 Feb 2020, 06:18 PM

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের একটি ব্যানারে এটা করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাহান্নোর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি ব্যানারেও মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

সমালোচনার জন্ম দেওয়া ওই ব্যানারের মাঝখানে লেখা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।’ এর একপাশে শহীদ মিনার এবং অন্যপাশে সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবি।

ব্যানারটির একটি ছবি শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসার পর তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ অন্যরা সমালোচনা শুরু করেন।

রেজওয়ান হোসাইন নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ছবিটি পোস্ট করে বলেছেন, “৫২ ও ৭১ কিংবা রফিক, সালাম, বরকতদের সাথে বীরশ্রেষ্ঠদের পার্থক্য, এতটুকু মনে রাখার জন্য কি আসলেই ইতিহাস নিয়ে পিএইচডি করতে হয়?”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত নাদিম মাহমুদ তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ, সাংবাদিক সবাই ঠিক আছেন। এদেশের যেকোন শিক্ষিত মানুষজনকে বায়ান্নোর ভাষা শহীদের নাম জিজ্ঞাসা করতে বলেন তখন তাদের মুখেই শুনতে পাবেন রফিক, বরকত, সালাম, নূর মোহাম্মদ, হামিদুর রহমান নাম। গুগলে যদি বলেন martyrs of Bangladesh তখন তো গুগলের এলগারিদমে ছবি আর বায়ান্ন একাত্তর বুঝবে না। মাথায় ভাষা শহীদের ছবি না ভাসলে একাত্তর আর বায়ান্নো তো একাকার হবেই নাকি?”

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম বলেন, তারা যে কাজটি করেছে তা খুব বড় রকমের ভুল। তাদের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া দরকার ছিল।

সংগীত বিভাগের সভাপতি দীনবন্ধু পাল বলেন, “শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হাতের ফেস্টুনে বীরশ্রেষ্ঠ এবং ভাষা শহীদ সবারই ছবি ছিল। কিন্তু যখন ছবি তোলা হয়েছে তখন হয়ত অংশগ্রহণকারীরা ফেস্টুন নামিয়ে নিয়েছিলেন। তাই হয়ত ভাষা শহীদদের ছবি আসেনি।”

ব্যানারে ভাষা শহীদদের ছবি না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভাষা শহীদ, বীরশ্রেষ্ঠ সবারই ছবি রেখেছিলাম। প্রেসের ভুলে হয়ত বা সব ছবি আসেনি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, “এ রকম একটি ব্যানার করে বিভাগটি নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরের মানুষজনকে আরও সচেতন হতে হবে। আশা করব, সবাই এ বিষয়গুলোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে।”