গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ১৭ জনের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায়।
সেদিনের ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হলেও কেউ পায়নি বলে জেলা প্রশাসন জানায়।
সোনাইমুড়ি উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের নূর নাহারের স্বামী নাছির উদ্দিন সেদিন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।
নূর নাহার জানান, তখন লাশ দাফনের জন্য সরকারিভাবে তাদের ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সরকারি চাকরি বা আর্থিক সহায়তার। কিন্তু এক বছরেও কিছু করা হয়নি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি পিতৃহারা আড়াই বছর বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে কান্নার ভেঙ্গে পড়েন।
“সান্তার যখন বাবার কথা জানতে চায় তখন কোনো উত্তর খুঁজে পাই না আমি,” বলেন নূর নাহার।
সেদিন কেউ হারিয়েছে স্বামী, কেউ হারিয়েছে একমাত্র সন্তান, কেউ হারিয়েছে একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে। যাদের মাঝে কেউ কেউ রয়েছে একমাত্র উপার্জনক্ষম। প্রিয়জন আর সহায় সম্বল হারিয়ে পরিবারগুলোতে এখন শুধুই হাহাকার।
কেউ খোঁজ নিতে গেলেই ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন সন্তানহারা বাবা-মা, স্বামীহারা স্ত্রী বা প্রিয়জনহারা স্বজনরা। কবরের পাশে এখনও খুঁজে বেড়ান প্রিয় স্বজনদের।
নাটেশ্বর ইউনিয়ন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে তেমন সহযোগিতা করা হয়নি। সম্প্রতি নাটেশ্বর ইউনিয়ন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নিহত ১৭ পরিবারকে এক লাখ করে এবং আহত তিন পরিবারকে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
“কিন্তু এ পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। দীর্ঘ এক বছর হয়ে গেল; আমি আবারও আবেদন করব তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে তা জানতে। জানলে বা এ ব্যাপারে নির্দেশনা পেলে তাদের আমরা সহায়তা শুরু করে দেব।”
জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী নোয়াখালীর নিহত ১৩ জন হলেন কামাল হোসেন, মোশাররফ হোসেন, আলী হোসেন, হেলাল হোসেন, সিদ্দিক উল্লাহ, মাসুদ রানা, মাহবুবুর রহমান রাজু, আয়েশা খাতুন, আবদুর রহিম, জসিম উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও শাহাদাত উল্লাহ হিরা।