আকবর স্বপ্ন দেখত দেশের জন্য জয় আনবে: মোস্তফা

যুবাদের বিশ্বকাপ জয়ে সারা দেশের মতো দলের অধিনায়ক আকবরের বাবা-মাও উচ্ছ্বসিত। দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা এই ক্রিকেটারের জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন তার বাবা।  

আফতাবুজ্জামান হিরু রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2020, 02:57 PM
Updated : 10 Feb 2020, 03:46 PM

রংপুরের সন্তান আকবরের বাড়ি গিয়ে কথা হয় তার মা সাহিদা আক্তার ও বাবা মো. মোস্তফাসহ স্থানীয়দের সঙ্গে।

রোববার অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ ক্রিকেট ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে অনন্য অবদান রয়েছে অধিনায়ক আকবরের।

রাতে খেলা শেষ হওয়ার পর আকবরের বাড়ি রংপুরের পশ্চিম জুম্মাপাড়ায় সংবাদ কর্মীসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় জমান। বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে তার বাড়ির সামনে এসে মেতেছে আনন্দে।  

আকবরের মা সাহিদা আক্তার বলেন, আকবর জয় নিয়েই দেশে ফেরার পণ করে খেলতে গিয়েছিল। তার অদম্য ইচ্ছাই তাকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

“আকবর আমার দোয়া নিয়ে খেলতে গিয়েছিল। আল্লাহর রহমতে সে আজ রংপুর তথা  বাংলাদেশের মুখ বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে।”

এ জয় পুরো দেশবাসীর জন্য উৎসর্গ করেন তিনি।

আকবরের বাবা মো. মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কান্না থামাতে পারছি না। এ কান্না খুশির কান্না। মহান আল্লাহতায়ালা তার উপর রহমত করেছে বলেই আজ রংপুর থেকে সে পুরো বিশ্বে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে।”

তিনি সবার কাছে ছেলের জন্য দোয়া কামনা করে বলেন, “আমার ছেলে স্বপ্ন দেখত যে সে দেশের হয়ে খেলবে এবং জয় ছিনিয়ে আনবে। তার দৃঢ় মনোবল আজ সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।”

স্থানীয় সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম নিশাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আকবর সীমাহীন ধৈর্যে্যর পরিচয় দিয়েছে বলে আমি মনে করি। তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি এবং তার হাত ধরে জয়ের ধারা অব্যহত থকাবে বলে আশা রাখি।”

আওয়ামী লীগ রংপুর জেলা সাংস্কৃতিক সম্পাদক আতিক উল আলম কল্লোল  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আকবর শুধু রংপুরের ছেলে না সে বাংলাদেশের ছেলে; সে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার সাফল্য কামনা করি।”  

রংপুর নগরীর মাউরাপট্টির মো. মোস্তফা ও সাহিদা দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট হলেন আকবর আলী।

আকবরের বড়ভাই মুরাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাঁচ বছর বয়সে বাড়ির গলিতে টেপ টেনিস বল আর নিজের তৈরি ব্যাট দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন আকবর। ৫ম শ্রণি পাশ করার পর তার (মুরাদ) পরামর্শে রংপুরের অসীম মেমোরিয়াল ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন। সেখানে অঞ্জন সরকারের হাত ধরে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে তার সত্যিকারের ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়।

মুরাদ জানান, ২০১২ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়াশিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিকেএসপিতে ভর্তি হন আকবর আলী। বিকেএসপির বয়সভিত্তিক দলে খেলে সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। শুধু ক্রিকেট নয় লেখাপড়ায়ও ভালো আকবর আলী। 

২০১৬ সালে তার এসএসসি পরীক্ষার সময় চলছিল প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ। তখন খেলা ও লেখাপড়া দুটিই সামলে নিয়েছেন তিনি। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এইচএসসিতে পান জিপিএ ৪.৪২।

খেলা চলার সময়েই তাদের বোনের মৃত্যু হয়। এই শোক সহ্য করে আকবর নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন, বলেন মুরাদ।