যশোরে চুরির আসামি গৃহবধূর চুল কর্তন, আটক ৩

যশোরে একটি চুরির মামলার আসামি ভাড়াটিয়া গৃহবধূকে মারধরের পর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে বাড়ির মালিকের স্ত্রী ও তার দুই মেয়েকে পুলিশ আটক করেছে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2020, 02:24 PM
Updated : 6 Feb 2020, 02:29 PM

ওই গৃহবধূর স্বামীর করা মামলায় এ তিনজনকে আটক করা হয় বলে চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব জানান।

মামলায় গৃহবধূর মেয়েকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ (৩৫) ও তার মেয়েকে (৪) চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার গভীর রাতে চৌগাছা পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কারিগরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। রাতেই ওই নারীর স্বামী তিনজনের নামে চৌগাছা থানায় মামলা করেন।

আটকরা হলেন বাড়ির মালিক জাফর ইমামের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া (৪৫) এবং তাদের দুই মেয়ে জান্নাত আরা ইমাম (২৪) ও সুমাইয়া ফারজানা (২০)।

গৃহবধূর স্বামীর দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রায় আট মাস ধরে তিনি স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে জাফর ইমামের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গত ২৬ জানুয়ারি তিনি বাসায় স্ত্রী-মেয়েকে রেখে গ্রামের বাড়ি যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামে যান। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি সুমাইয়া ফারজানা মোবাইল ফোনে জানান তার (বাদী) স্ত্রী সোনার গহনা চুরি করে পালিয়েছেন। ৩ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে ফিরে তিনি স্ত্রীকে খুঁজে বাড়ি আনেন।

মামলায় আরও বলা হয়, ওই গহনা চুরির ঘটনায় বাড়ির মালিক চৌগাছা থানায় এই নারীর (বাদীর স্ত্রী) বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং পুলিশ তাকে ধরে আদালতে সোপর্দ করে। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে গত বুধবার ভাড়া বাসায় ফিরে আসেন।

অভিযোগে বলা হয়, এরপর রাত ১২টার দিকে তিন আসামি তাদের (বাদী) ঘরে ঢুকে কথাকাটাকাটিতে জড়ান। এক পর্যায়ে তারা বাদীর স্ত্রীকে বেদম প্রহারে রক্তাক্ত জখম করেন এবং মাথার চুল কেটে দেন। এ সময় তারা তার মেয়েকেও মারধর করেন।

পরে তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন এবং আহতদের উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, “আমার সিজারিয়ান অপারেশনের জায়গা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে। তারা আমার শিশু কন্যাকেও এমনভাবে আঘাত করেছে যে চিকিৎসকরা তার বিভিন্ন পরীক্ষা করতে বলেছেন।”

তিনি চুরি করেননি; তাকে অপবাদ দিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি এই নারীর।

চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাহিদ সিরাজ বলেন, “বড় ধরনের কোনো আঘাত আছে কিনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে।”

চৌগাছা থানা পুলিশের ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং আসামি তিন নারীকেই আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ওই নারী গহনা চুরির সঙ্গে জড়িত কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা চুরির মামলার তদন্ত চলছে।