রাঙামাটির ৬ ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের ছয় নেতাকে শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2020, 03:56 PM
Updated : 5 Feb 2020, 03:59 PM

কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারন সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় বলে জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ফেইসবুকেও এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল আলম রাশেদ, সহসভাপতি রূপম দাশ, যুগ্ম সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন শাকিল, দপ্তর সম্পাদক নুর আলম ও উপ-দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম স্বাধীন।

এদিকে, এই বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদে বুধবার স্থানীয়ভাবে সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মী বিক্ষোভ করেছেন।

এই অংশের নেতারা বর্তমান জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত এবং নতুন কমিটি ঘোষণা করেন গত ২৮ জানুয়ারি। ওই সময় তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তোলেন।     

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় ও দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনিবার্হী সংসদের এক জরুরি সভায় এই ছয় নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেন, “বহিষ্কারের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদক।”

প্রকাশ চাকমা বলেন, “বহিষ্কৃতরা গত ২৮ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে যে ‘অগণতান্ত্রিক’ কাজ করেছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সেই সংবাদ দেখে কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক আমাদের কাছে বিষয়টি জানতে চান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা জেলা ছাত্রলীগ লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছি। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ।”

এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করে কেউই পার পাবে না, বলেন তিনি।

এদিকে, ছয় ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবং এই আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে রাঙামাটিতে বুধবার বিক্ষোভ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।

সকালে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বনরূপায় এসে তারা সমাবেশ করেন।

সদ্য বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সাইফুল আলম রাশেদের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বাপ্পা, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ নেতা স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।

বক্তারা বলেন, জেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ষড়যন্ত্র করে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই বহিষ্কারের ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে; এবং এই বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবি জানান।

গত ২৮ জানুয়ারি সকালে জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের একাংশ বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা দেয়।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা যুগ্ম সম্পাদক ও রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাপ্পা বলেন, বর্তমান জেলা কমিটি অনেক আগেই মেয়াদ পেরিয়েছে। সভাপতি সম্পাদক একের পর এক অনৈতিক, সংগঠনের চেতনা ও গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সবাইকে বিব্রত করছেন।

“এছাড়া বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির বিভিন্ন অভিযোগও রয়েছে।”

ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, সংগঠনের এক সভায় দুই তৃতীংশের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তমতে বর্তমান কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সংগঠনের সহ-সভাপতি সাইফুল আলম রাশেদ ও যুগ্ম সম্পাদক মঈনুদ্দীন শাকিলকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।