২০১৪ সালে মাত্র ২২ শতক জমিতে শুরু হওয়া ফুলের খামার এখন ছড়িয়ে গেছে এ উপজেলার প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে।
উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের তাজনগর গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান বিপ্লব। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ৯০ হাজার টাকা খরচ করে যশোর থেকে ২৫ হাজার গোলাপ চারা সংগ্রহ করেন। সেসব চারা তার ২২ শতক জমিতে গড়া খামারে রোপন করেন। এতে তার ১০ হাজার টাকা খরচ হয় বলে জানান তিনি।
বিপ্লব এখন তিন বিঘা জমিতে চাষ করছেন গোলাপ। প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকার ফুল বিক্রি করছেন। সব খরচ বাদ দিয়েও তার মাসে ৮৫ হাজার টাকা আয় হচ্ছে বলছেন তিনি।
মোখলেছুর রহমান বিপ্লব জানান, প্রথমে ফুল বিক্রি করতে বেশ বেগ পেতে হত। গাইবান্ধা শহরের কয়েকটি ফুলের দোকান ছিল তার একমাত্র ক্রেতা।
তিনি বলেন, বাগান থেকে ফুল ওঠানোর পর গোছা বেঁধে তাতে ঠিকানা ও ফোন নম্বর লিখে পলাশবাড়ী থেকে বাসে উঠে দিলেই জায়গায় চলে যায়।
“টাকা আসে মোবাইল ফোনে, ফুল বিক্রি নিয়ে আর কোন ঝামেলা নাই।”
বিপ্লবের ফুলচাষে অনুপ্রাণিত হয়ে তার গ্রামের আনিছুর রহমান, পাশের চকনদী গ্রামের মোস্তাফিজার মিয়া ও সবুজ মিয়া, রাঘবেন্দ্রপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, মহিপুর গ্রামের আমিনুর রহমান, গোবিন্দ্ররায় দেবত্তর গ্রামের শাহিন মিয়া ফুল চাষ শুরু করেন। ওই ইউনিয়নে এখন প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা ও গ্লাডিওলাস ফুল।
“পরিশ্রম কম ও বিনিয়োগও কম। একবার গোলাপ চারা লাগালে টানা দশ বছর ধরে ফুল পাওয়া যায়।”
ফুল চাষি গোবিন্দ্ররায় দেবত্তর গ্রামের শাহিন মিয়া জানান, অন্য ফসলের মত ফুল চাষে তেমন ঝুট-ঝামেলা নেই। তাই অল্প পূঁজি আর স্বল্প পরিশ্রমে অনেক বেশি লাভের আশায় রাঘবেন্দ্রপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মত অন্যরাও ফুলচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আর এজন্য কৃষি বিভাগের সহায়তা চান তারা।
তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ করে রজনীগন্ধা চাষ করেছেন। তা থেকে গত এক বছরে এক লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। আরও দুই বছর এ পরিমান টাকা পাবেন আশা তার।
এছাড়া দুই হাজার টাকা খরচ করে ১৫ শতক জমিতে গ্লাডিওলাস চাষ করে মাত্র তিন মাসে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন জানান তিনি।
সাদুল্লাপুর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান বলেন, ফুল চাষে পরিচর্যা ও মাঝে মাঝে সামান্য সার প্রয়োগ করতে হয়।
ফলে দিন দিন ফুল চাষের দিকে এই উপজেলার কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলছেন তিনি।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খাজানুর রহমান জানান, ২০১৪ সালে মাত্র ২২ শতক জমিতে শুরু হয়ে এখন এ উপজেলায় প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ফুল।