পাবনায় ২ বোনের মৃত্যু: নমুনা আইইডিসিআরে

পাবনায় স্কুল থেকে ফিরে বমি করে হাসপাতালে যাওয়ার পর দুই স্কুলছাত্রী সহোদরার মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে নমুনা নিয়ে গেছেন আইইডিসিআরের প্রতিনিধিরা।

সৈকত আফরোজ আসাদ পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2020, 01:45 PM
Updated : 3 Feb 2020, 02:58 PM

পাবনার সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল জানান, সোমবার জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) অনুসন্ধান দলের সদস্যরা ঘটনাস্থল পাবনার ফরিদপুর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে মৃত সাথী ও বীথির বাড়িপরিদর্শন করেছেন এবং নমুনা নিয়ে গেছেন ঢাকায়।

এ সময় পাবনার সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল ও ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুলু ওয়াল মারজান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রোববার আইইডিসিআর-এর মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলকে নির্দেশ দেন। একই পত্রে মাঠ পর্যায়ের তদন্ত শেষে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

আইইডিসিআরের মেডিকেল অফিসার ডা. আবআদুল্লাহেল মারুফ আল ফারুকী সাংবাদিকদের একথা জানান। 

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফিরে বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে দুই সহোদরা সাথী খাতুন (১৪) ও বীথি খাতুন (১০)। বৃহস্পতিবার ভোররাতে সাথী এবং শুক্রবার রাতে বীথির মৃত্যু হয়।

এদিকে, সোমবার বিকাল ৩টায় পাবনা সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেখানে তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, যেহেতু একই পরিবারের দুই শিশু দুই দিনের ব্যবধানে মারা গেছে, সে কারণে বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

“বিষয়টি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছিল। সেখান থেকে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান টিম পাবনায় এসে তদন্ত করে দেখছে।”

তিনি বলেন, ঠিক কী কারণে দুইবোনের মৃত্যু হয়েছে সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় ফিরবেন এই বিশেষজ্ঞ দল। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

সিভিল সার্জন বলেন, “তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর কারণে আতংকে গণহিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গ্রামের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।”

বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীকে আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

আইইডিসিআরের মেডিকেল অফিসার ডা. আবআদুল্লাহেল মারুফ আল ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, আইইডিসিআরের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা মৃত দুইবোনের বাবা-মাসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। এর আগে তারা পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।

মৃত সাথী ও বীথি ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম প্রামানিকের মেয়ে। সাথী খাতুন অষ্টম শ্রেণির ও বীথি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছে। ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার লুলু ওয়াল মারজানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এই মেডিকেল টিম রোববার সকালে ওই গ্রামে পরিদর্শনে যায়। তারা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং গণহিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।