গোপালগঞ্জে ১২টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত

গোপালগঞ্জ-রাজাশাহী ও ভাটিয়াপাড়া-রাজবাড়ী রেল লাইনের ১২টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে দুটিতে ইতিমধ্যে মোটরসাইকেলে ট্রেনের ধাক্কায় সাতজন প্রাণ হারিয়েছে।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2020, 04:09 AM
Updated : 30 Jan 2020, 04:09 AM

এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও আতংকের সৃষ্টি করেছে। প্রাণহানি ঠেকাতে স্থানীয়রা এসব ক্রসিংয়ে গেট নির্মাণের দাবি জানান।

রেলওয়ের রাজবাড়ী কার্যালয়ের তথ্য থেকে জানা যায়, গোপালগঞ্জ থেকে ভাটিয়াপাড়া হয়ে কাশিয়ানী উপজেলা পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার রেল লাইনে মোট ৩০টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে, যার ১৮টিতে গেটম্যান আছে, ১২টিতে নেই। এ ১২টি লেভেল ক্রসিং অনুমোদনহীন বলছেন তারা।

কাশিয়ানী উপজেলার ব্যাসপুর গ্রামের আহাদ আলী বলেন, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) অরক্ষিত বিশ্বনাথপুর লেভেল ক্রসিংয়ে মোটরসাইকেলে ট্রেনের ধাক্কায় তিন শিক্ষার্থী নিহত হন; আহত হন আরেকজন। রাতে ওই আহত শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপতালে।

“এ ঘটনার পর অরক্ষিত রেল ক্রসিং নিয়ে আমাদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে গেট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি আমরা।”

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বোড়াশী গ্রামের আবুল বশার বলেন, গত বছরের ১৯ মার্চ রাতে বোড়াশী রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। ওই সময় এখানে দায়িত্বরত গেটম্যান উপস্থিত ছিলেন না।

“তারপর রাজবাড়ী রেলের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তদন্ত করা হয়। ওই গেটম্যানকে শাস্তি দেওয়া হয়।”

রেলওয়ের রাজবাড়ী কার্যালয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকেশলী কাজী ওয়ালিউল হক বলেন, “আন-অথরাইজড লেভেল ক্রসিংয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমাদের রেল লাইনের ওপর দিয়ে এলজিইডি রাস্তা করেছে। সেখানে আন-অথরাইজড লেভেল ক্রসিংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আমাদের তেমন কিছুই করার নেই।”

তারা সেখানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন এবং ট্রেন চলাচলের সময় যানবাহন ও লোকজনকে দেখে শুনে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

“আন-অথরাইজড লেভেল ক্রসিংয়ে গেট নির্মাণ করতে হলে জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে অনুমোদন দিলেই গেট নির্মাণ করে দেওয়া হবে।”

গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে ফজলুল হক বলেন, “গোপালগঞ্জ অংশে রেল লাইন চালু হয়েছে ২০১৮ সালের নভেম্বরে। এর আগেই আমরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক নির্মাণ করি। এ সড়কের ওপর দিয়ে ট্রেন লাইন গেছে। এসব স্থানে রেলগেট নির্মাণ না করে ট্রেন চালু করায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।”

রেল লাইনে জনগণের জানমাল ও জীবনের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রেল বিভাগের বলে তিনি মনে করেন।