তেঁতুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাথরশ্রমিক নিহত

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মাটি খুঁড়ে পাথর তোলায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধকারী শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। শ্রমিকসহ কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 01:40 PM
Updated : 26 Jan 2020, 01:40 PM

রোববার তেঁতুলিয়া-ঢাকা মহাসড়কের ভজনপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান।

নিহত জুমার উদ্দীন (৬০) ভজনপুর ইউনিয়নের গণাগছ গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় ঢাকা-তেঁতুলিয়া মহাসড়কে কয়েকঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহত অন্তত ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার পুলিশ ও চার শ্রমিককে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে এবং তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এসপি ইউসুফ আলী বলেন, সকাল ১০টায় ভজনপুরে পাথর শ্রমিকরা ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলনের দাবিতে তেঁতুলিয়া-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে গেলে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।

“এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ইট-পাটকেল ও পাথর নিক্ষেপসহ লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তারা পুলিশের তিনটি গাড়িও ভাংচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও আত্মরক্ষায় পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।”

এ সময় নায়েক মেহেদী হাসান (২৬), কনস্টেবল জয়ন্ত কুমার (২১) ও ইমতিয়াজসহ (২১) আট পুলিশ এবং নীলফামারী র‌্যাব-১৩-এর ডিএডি আবু বক্কর, র‌্যাব সদস্য ফেরদৌস রনি ও সাইদুল ইসলামসহ অন্তত ২০/২৫ জন আহত হন বলে এসপি জানান।

দুপুরের দিকে মহাসড়কে যান চলাচল আবার শুরু হয়।

আহত শ্রমিকদের মধ্যে জুমার উদ্দীনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন বলে এসপি জানান। 

তেঁতুলিয়া থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, পাথর শ্রমিক জুমার উদ্দীনের নিহতের ঘটনায় ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। জড়িতদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সিরাজ উদ্দৌলা পলিন বলেন, “আহত জুমার উদ্দীন অনেকটা অজ্ঞান অবস্থায় শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন ও তার পিঠে বেশ কয়েকটি ক্ষত চিহ্ন ছিল। চিকিৎসা চলাকালেই তিনি মারা যান।

“বর্তমানে ৪ জন পুলিশ সদস্য ও ৪ জন শ্রমিক হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া গুরুতর আহত ৩ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক বলেন, মাটি খনন করে পাথর উত্তোলনের নামে একটি চক্র অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিল। এতে পরিবেশ বিপর্যের আশঙ্কা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে গত বছরের জুলাই মাসে জেলা প্রশাসন তেঁতুলিয়াসহ জেলায় ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। এ নিয়ে পাথর শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এ অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ শ্রমিকদের সামনে এনে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মদদ দিয়েছে।