গাইবান্ধায় বিরল প্রজাতির কালা শকুন উদ্ধার

গাইবান্ধা সদরের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের তরফকামাল গ্রাম থেকে বিরল প্রজাতির একটি কালা শকুন উদ্ধার হয়েছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2020, 02:43 PM
Updated : 21 Jan 2020, 02:43 PM

মঙ্গলবার বিকালে শকুনটিকে দিনাজপুরের সিংরিয়া বন কর্তৃপক্ষের শকুন লালন-পালন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধা জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুছ সবুর হোসেন।

তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিটি উচ্চতায় তিন ফুট এবং ওজন আনুমানিক ১৫ কেজি।

এ পাখি প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সীমান্ত দিপু জানান, এটি একটি বিরল প্রজাতির কালা শকুন (Cinereous Vulture)।

“কালা শকুন শুধু বিরলই নয়, বিরলতম পরিযায়ী পাখি। এরা পাহাড়ের খাদে কিংবা উঁচু গাছে বাসা বাঁধে। বছরে মাত্র একটি ডিম পাড়ে এবং সেটি ফুটে বাচ্চা হয়।”

আইইউসিএন ভালচার কন্সালটেন্ট মিজানুর রহমান জানান, এ প্রজাতির শকুন বাংলাদেশে সচারাচর দেখা যায় না।

“ধারনা করা হচ্ছে মাইগ্রেট করার সময় দীর্ঘযাত্রার ক্লান্তি আর প্রচণ্ড শীতের কারণে দুর্বল হয়ে শকুনটি মাটিতে পড়ে যায় “

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খাঁন মো. শাহরিয়ার জানান, সোমবার বিকেলে এক ঝাঁক পাখি উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে উড়ে যাচ্ছিল। ওই দল থেকে হঠাৎ একটি পাখি তরফকামাল গ্রামের ফসল ক্ষেতে পড়ে যায়।

“স্থানীয়রা পাখিটি ধরে বেঁধে রেখে থানায় খবর দেন। সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাখিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।”

তিনি জানান, থানায় আনার পর পাখিটিকে বেশ কয়েকটি মুরগির মাংস খাওয়ানো হয়।

আইইউসিএন সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সীমান্ত দিপু জানান, পৃথিবী থেকে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুন বিশ্বে মহাবিপন্ন প্রাণী (Critically Endangered) হিসেবে দেখা হয়।

“আর বাংলাদেশে তো শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আইইউসিএন-এর হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।”

পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য সংকট এবং বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এ পাখি হারিয়ে যাচ্ছে।

শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানো পাশাপাশি মানুষ এনথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু থেকে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে শকুনটিকে সুস্থ্য করে অভয়ারণ্যে অবমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বন কর্মকর্তাদের।