সরকারি কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তনের দাবিতে কর্মবিরতি শুরু

সারা দেশে সরকারি তৃতীয় শ্রেণির কর্মীদের পদবী পরিবর্তনের দাবিতে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে, চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2020, 06:25 PM
Updated : 20 Jan 2020, 07:26 PM

সোমবার বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস) ডাকে জেলায় জেলায় এ কর্মবিরতিতে অংশ নেন সরকারি কর্মীরা।

২০০১ সাল থেকে কালেক্টরেটে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন এবং বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।

২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী এ পদবী পরিবর্তন সংক্রান্ত সার সংক্ষেপ অনুমোদন দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

এর প্রেক্ষিতে সারা দেশে ২০ তারিখ থেকে শুরু হওয়া ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলনের এ কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।

২০ ও ২১ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা, ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে ১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন তারা।

এরপরও দাবি আদায় না হলে আন্দোলন অব্যাহত রেখে ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন তারা।

আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

কুমিল্লা

সকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ের ফটকের সামনে কর্মবিরতি পালন করেন কালেক্টরেট সহকারী সমিতি জেলা শাখা।

এ সময় কালেক্টরেটের কর্মচারীরের আমাদের দাবি মানতে হবে স্লোগানে মুখরিত ছিল জেলা প্রশাসক অফিস।

বিভাগীয় কমিশনার অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিসের তৃতীয় শ্রেলির কর্মচারীরা তাদের পদবি পরিবর্তন করে  প্রশাসনিক কর্মকর্তা করার জন্য দাবি জানিয়েছে আসছেন।

কুমিল্লায় এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলার কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি মো. হানিফ, সহ-সভাপতি সুলতান নাছির উদ্দিন, সাধাররণ সম্পাদক মো. আরিফুর রহমানসহ অনেকে।

বক্তারা বলেন, বারবার আশ্বাস দিলেও পদবী পরিবর্তনের দীর্ঘ দিনেও দাবি বাস্তবায়নের আলোর মুখ দেখেনি। ২০১১ সালের ১৯ জুন প্রধানমন্ত্রী পদবী পরিবর্তন সংক্রান্ত সার সংক্ষেপে অনুমোদন দেন তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

জামালপুর

জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল সমন্বয় করার দাবিতে জামালপুরে কর্মবিরতি পালন করেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস)।

এদিকে কর্মসূচি চলাকালে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে সেবা নিতে আসা মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে।

সোমবার বাকাসস জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি কর্মসূচিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

কর্মসূচি চলাকালে বাকাসস’র জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি শামস উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দীন আকন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আসমাউল আজাদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকা সত্তেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ সম্মতি প্রদান না করে একটি কোয়েরি দিয়ে বিভাগী, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল সমন্বয় করা সংক্রান্ত দাবি বাস্তবায়নে দীর্ঘ দিন থেকে সময়ক্ষেপন করে আসছে।

দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

রাজশাহী

সোমবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন তারা।

এ সময় তারা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে কর্মরত কালেক্টরেট সহকারীর (গ্রেড ১৩-১৬) পদবি পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নতির দাবি জানান।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মান্নান মিজির, সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা (বাবু), সহ-সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈকত সরকার, দপ্তর সম্পাদক মাসুদ করিম, উপদেষ্টা মুন্তাজ আলী প্রমুখ।

নীলফামারী

পদবী পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে নীলফামারীতে কর্মবিরতি শুরু করেছে কালেক্টরেট (১৩ থেকে ১৬ গ্রেড) সহকারীরা।

সোমবার সকাল ৯টায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) নীলফামারী জেলা শাখার সদস্যরা।

কর্মবিরতি চলাকালে সেখানে সংগঠনের সভাপতি ইউছুব আলীর সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি আশরাফ আলী শাহ ফকির, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খালেকুজ্জামান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক সুরঞ্জন কুমার রায়, প্রচার সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

কর্মবিরতি শেষে একই দাবিতে সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কালেক্টরেটে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন এবং বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের জন্য আমরা ২০০১ সাল থেকে দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালের ১৯ জুন পদবী পরিবর্তন সংক্রান্ত সার সংক্ষেপ অনুমোদন দেন কিন্তু তা দীর্ঘ দিনেও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এমনকি গত ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল মন্ত্রী পরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সপ্তম সভায় সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য ২৫ এপ্রিল তারিখের ২২১ নম্বর স্মারকে নির্দেশনা প্রদান করা হলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটি বাস্তবায়ন করেনি।

বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি মো. ইউছুব আলী বলেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা কর্মবিরতির শুরু করেছি।

“২০ তারিখ থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর মধ্যে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে ২০ ও ২১ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে ১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা এবং ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব।”