মৌলভীবাজারে ৪ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনায় দুই মামলা

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় স্ত্রী ও শাশুড়িসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2020, 09:40 AM
Updated : 20 Jan 2020, 09:54 AM

বড়লেখা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিনুল হক জানান, উপজেলার সীমান্তবর্তী পাল্লাতল চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বাদী হয়ে রোববার রাতে এ মামলা দুটি দায়ের করেন।

এর আগে রোববার ভোরে পাল্লাথল চা বাগানে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর নির্মল কর্মকার (৩২) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানায়।

নিহতরা হলেন- নির্মল কর্মকারের স্ত্রী জলি বুনাজী, তার শাশুড়ি লক্ষ্মী বুনাজী, প্রতিবেশী বসন্ত বক্তা ও তার মেয়ে শিউলি বক্তা।

এ ঘটনায় নিহত বসন্ত বক্তার স্ত্রী সুস্মিতা বক্তা অরফে কানন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর ঘটনার সময় পালিয়ে রক্ষা পায় নির্মলের স্ত্রী জলির আগের পক্ষের মেয়ে আট বছরের মেয়ে চন্দনা বুনাজী।

পরিদর্শক ইয়াসিনুল বলেন, জলি বুনাজী, লক্ষ্মী বুনাজী, বসন্ত বক্তা ও তার মেয়ে শিউলি বক্তার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা এবং গলায় ফাঁস দিয়ে নির্মলের আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।   

স্থানীয়রা জানান, বড়লেখা উপজেলার সীমান্তবর্তী পাল্লাতল চা বাগানের বাজার টিলার বাসিন্দা বিষ্ণু বুনাজীর মেয়ে বাগান শ্রমিক জলি বুনাজীকে (২৮) দেড় বছর আগে বিয়ে করেন নির্মল কর্মকার। বিয়ের পর নির্মল এখানেই ঘর জামাই থাকতেন। তাদের সঙ্গে জলির আগের সন্তান চন্দনাও থাকতো।

মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ বলেন, “রোববার সকালে নির্মল ও জলির মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে নির্মল ধারাল দা দিয়ে জলিকে কোপাতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে মা লক্ষ্মী ব্যানার্জির (৪৭) ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন।

সেখানে তার মা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে নির্মল তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে প্রতিবেশী বসন্ত ও তার মেয়ে এগিয়ে গেলে তাদেরও কুপিয়ে হত্যা করে নির্মল। এ সময় আত্মরক্ষার্থে জলি বসন্ত বক্তার ঘরে গেলে নির্মল সে ঘরে গিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সে ফাঁস লাগিয়ে নিজেও আত্ম হত্যা করে।”

এ সময় জলির আগের পক্ষের মেয়ে চন্দনা ঝগড়া শুরুর পরই পালিয়ে যাওয়ায় নির্মলের হাত থেকে রক্ষা পায় বলে জানান পুলিশ সুপার।  

অন্যদিকে বসন্তের ঘরে তার দুই ভাগ্নিসহ তিনজন অতিথি ছিলেন। ঘটনার সময় তারা ‘ভয়ে’ পালিয়ে যায় বলে বড়লেখা থানার ওসি (তদন্ত) জসিম উদ্দিন জানান।

তবে ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি-না পুলিশ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান জসিম। 

এদিকে সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে পাঁচজনের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার আহমদ ফয়সল জামান জানান।

নির্মলের মাথায় ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে বলে এ চিকিৎসক জানান।