নীলফামারীতে নছিমনের ধাক্কায় প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের

নীলফামারীতে স্কুল থেকে ফেরার পথে স্থানীয়ভাবে নির্মিত শ্যালো ইঞ্জিন চালিত যান নছিমনের ধাক্কায় নিহত হয়েছে এক স্কুল ছাত্র।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2020, 03:02 PM
Updated : 12 Jan 2020, 03:03 PM

রোববার দুপুর ১টার দিকে নীলফামারী সদরের ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে শহর-বাইপাস সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহত মোরসালীন ইসলাম হাসিফ (১৩) জেলা সমাজসেবা দপ্তরের সাধারণ কর্মচারী ও ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই ছাড়ারপাড় গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বাদশার ছেলে। সে নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু শফি মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আশার আগেই মৃত্যু হয় মোরসালিনের।

এ ঘটনায় আহত অপর দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তারা হলেন জেলার জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ পাঠানপাড়া গ্রামের গরু ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম (৪০) ও জাহিদ হোসেন (৫০)।

নছিমনের আরোহী অপর গরু ব্যবসায়ী মশিয়ার রহমান (৪৫) বলেন, “জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ পাঠানপাড়া থেকে নছিমনে ১০টি গরু নিয়ে নীলফামারীর হাটে যাচ্ছিলাম আমরা। এ সময় পথে দুর্ঘটনা ঘটে।”

একই স্কুলের ছাত্র মোরসালিনের চাচাত ভাই মোস্তাকিন ইসলাম বলেন, “আমি ও হাসিফ প্রভাতি শাখায় পড়ি। একসাথে স্কুলে গেছি।

“১১টা ৫০ মিনিটে বিদ্যালয় ছুটি হলে আমি বাড়ি ফিরে আসি। সে ছুটির পর কোচিং করে বাড়ি ফেরার পথে ওই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।”

নীলফামারী সদর থানার ওসি মো. মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘১০টি গরুসহ নসিমনটি আটক করা হয়েছে। তবে নসিমন চালক ময়নুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।

স্বজনের আহাজারি

নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, মোরসালিন বিদ্যালয়ের আষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। প্রভাতি ‘গ’ শাখার তার রোল নম্বর ৫।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “অবৈধ এসব যানবাহন সড়কে চলাচলের কারণে আজকে আমার একটি মেধাবী ছাত্রকে হারাতে হল।”

মেধাবী ছেলেকে হারিয়ে দরিদ্র পরিবারটির সদস্যরা ভেঙে পড়েছে। মোরসালিনের মা হাসিনা বেগম ছেলে হারানোর শোকে বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন।

মোরসালিনের দাদা আজিজুল হক (৬৫) বলেন,“নাতি আমার ডাক্তার হতে চেয়েছিল। এজন্য কষ্ট হলেও তার লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলাম আমরা।

“কিন্তু ওই নছিমন সে স্বপ্ন পূরন হতে দিল না।

তিন ভাইবোনের মজে মোরসালীন। তার বড় বোন রাজিয়া আকতার রংপুর পুলিশ লাইন কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয়বর্ষে পড়ে এবং ছোট বোন মিলি আকতার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন।