বুড়িগঙ্গায় ‘বাংলা ক্যাটের’ ২ প্রকৌশলী নিখোঁজ

নারায়ণগঞ্জ থেকে আশুলিয়া ফেরার পথে বুড়িগঙ্গায় একটি প্রতিষ্ঠানের দুই প্রকৌশলী নিখোঁজের অভিযোগে থানায় জিডি করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2020, 06:04 AM
Updated : 10 Jan 2020, 07:34 AM

নিখোঁজরা হলেন- ‘বাংলা ক্যাট’ কোম্পানির প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার) মাহফুজুর রহমান জিসান ও লিখন সরকার।

জিসান (৩২) সাভারের আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকার মোকলেসুর রহমানের ছেলে। আর লিখনের বাড়ি আশুলিয়ার নরসিংপুরে।

গত শনিবার (৫ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলীর রাজাপুর এলাকার বড়িগঙ্গা নদীতে এ ঘটনার দুইদিন পর জিসানের স্ত্রী রাফিয়া সুলতানা আশুলিয়া থানায় জিডি করেন।

নিখোঁজ জিসানের বড় ভাই শোয়েব আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, গত শনিবার বিকালে আশুলিয়া থেকে তার ছোট ভাই জিসান ও তার সহকর্মী লিখন সরকার নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলীতে রাজাপুর এলাকায় ‘বুড়িগঙ্গা এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ভেকু মেরামত করতে যান।

সেখানে কাজ শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বলে তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে জানান। কিন্তু ভোর পর্যন্ত জিসান বাড়ি না আসায় তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মোবাইলে ফোন করে বন্ধ পান। পরে তারা বিষয়টি বাংলা ক্যাট কোম্পানিকে জানান।

শোয়েব বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা এন্টারপ্রাইজের’ মালিক সজীব মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের জানান যে- শনিবার রাত সাতে ৩টার দিকে তার কর্মচারী পায়েল ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে জিসান ও লিখনকে নিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী পার হচ্ছিলেন।পথে একটি জাহাজ কাছাকাছি নৌকার কাছাকাছি এসে পড়লে ট্রলারের চালক পায়েলসহ জিসান ও লিখন নদীতে ঝাঁপ দেন। ভোরের দিকে পায়েল সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও জিসান ও লিখন নিখোঁজ হন।

তবে নিখোঁজ জিসান ও লিখনের স্বজনদের অভিযোগ, বুড়িগঙ্গা এন্টারপ্রাইজের মালিক সজীব পুরো বিষয়টি একদিন গোপন রাখেন এবং বিভিন্ন সময়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেন। যার কারণে নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।

শোয়েব বলেন, ঘটনার পরদিন রাতে তারা ফতুল্লা থানায় গিয়ে জিডি করতে চাইলেও পুলিশ জিডি গ্রহণ করেনি। তাই তারা বাধ্য হয়ে ৭ জানয়ারি তারা আশুলিয়া থানায় জিডি করেন।

এ বিষয়ে বাংলা ক্যাট কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তা (হেড অব সিকিউরিটি এন্ড সেফটি) আশিক মাহমুদ বলেন, “নিখোঁজ দুই প্রকৌশলীর সন্ধানে আমরা থানা, নৌ-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অবগত করেছি। এছাড়া কোম্পানির পক্ষ থেকেও আমরা সব ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।”

এদিকে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ও নৌ-পুলিশ নদীতে তল্লাশি চালিয়েও নিখোঁজদের কোন হদিস পায়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ঘটনাটি জানার পর ঘটনাস্থলের চার কিলোমিটার এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়েছে।ডুবন্ত কোনো মানুষের আলামত পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, “নদীতে ডুবে গিয়ে থাকলে দুই দিনের মধ্যেই ভেসে উঠার কথা। চারদিনেও ভেসে না ওঠায় আসলেই কি তারা নদীতে ডুবে গিয়েছে কিনা সেই ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তারপরেও আমরা ডুবুরি নামিয়ে আবারও তল্লাশি চালাব।”

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, দুই প্রকৌশলী নদী পাড় হতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগে থানায় জিডি করা হয়েছে।

“ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। বুড়িগঙ্গা এন্টারপ্রাইজের মালিক সজীব ও তার কর্মচারী ট্রলার চালক পায়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”