শাবির সমাবর্তনে উৎসবে মেতেছে পুরনোরা

এক যুগেরও বেশি প্রতীক্ষার পর সমাবর্তনে আসা কয়েক হাজার স্নাতকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন।

হোসাইন ইমরান, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2020, 04:43 PM
Updated : 7 Jan 2020, 04:49 PM

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের উপস্থিতিতে সনদ গ্রহণ করবেন ৬ হাজার ৭৫০ জন গ্র্যাজুয়েট। এর আগে দ্বিতীয় সমাবর্তন হয়েছিল ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর।

সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে নতুন মোড়কে; নান্দনিকভাবে। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পুরনো শিক্ষার্থীরা; কখনও দলবেঁধে বসে গল্প করছেন, কোথাওবা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মেতেছেন হাসিঠাট্টায়। অনেকদিন পর যেন আবার সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে গেছেন তারা।

প্রধান ফটক থেকে শুরু করে ৩২০ একরের পুরো ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফেস্টুন, তোরণ, জায়গায় জায়গায় শৈল্পিক কারুকার্যের গেট ও স্থাপনা দিয়ে সাজনো হয়েছে নতুন রূপে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তৈরি করা হয়েছে মূল অনুষ্ঠানের মঞ্চ।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো ক্যাম্পাসে জুড়ে অবস্থান করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদৃস্যরা। অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে টানানো হয়েছে সমাবর্তন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও নির্দেশনা।

ক্যাম্পাসে এসে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা; বন্ধু-বান্ধব আর সিনিয়র-জুনিয়ররা অনেকদিন পরের সাক্ষাতে মেতে উঠেছেন আনন্দ-আড্ডায়।

ইংরেজি বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত জাহান বর্তমানে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সদরের কৃষি ব্যাংকে অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক বছর পরে সমাবর্তন হলেও এটি আমাদের জন্য  আবেগের বিষয়। অনেক বন্ধু বান্ধবী দেশে বিদেশে আছে। সমাবর্তনের কারণে সবার সাথে দেখা হচ্ছে।”

সিলেট শেভরনের প্রেডাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০০৫-০৬ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। সমাবর্তনে অংশ নিতে ক্যাম্পাসে এসেছেন তিনি।

“অনেকদিন পর ক্যাম্পাসে এসে ভালো লাগছে। আনন্দের এই মুহূর্তগুলো কখনও ভুলবার নয়। ছবি তুলে ফ্রেমে বন্দি করে রাখছি। যখন কোনো বন্ধু পাশে থাকবে না, তখনই আমি আবার স্মৃতির পাতা খুলে বসব। ছবিতে দেখে স্মৃতি রোমন্থন করব,” বলেন জাহিদ।

গণিত বিভাগের ০৫-০৬ সেশনের শিক্ষার্থী পলাশ চন্দ্র দাশ বলেন, “সমাবর্তন বছরে বছরে হওয়া উচিত ছিল। আমরা এখানে থাকাকালে সমাবর্তন পেলে ভালো হতো। এখন তো অনেক কষ্ট করে আসতে হচ্ছে। প্রতিবছর হলে আমরা অনিশ্চয়তার মাঝে থাকতাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ বছর বয়সে এটা ৩য় সমাবর্তন, যেটা আমাদের কাছে কখনোই স্বাভাবিক মনে হয় না।”

বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে।

রেজিস্ট্রেশন করা ৬ হাজার ৭৫০ গ্র্যাজুয়েটের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর দুই ডিগ্রিতে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য ২০ জনকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক প্রদান করবেন।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বিশিষ্ট লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে রাখা হয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আশা করি সফলভাবে সমাবর্তন সম্পন্ন হবে। আমরা এখন থেকে প্রতিবছর সমাবর্তন আয়োজনের চেষ্টা করব। সেই ধারাবাহিকতায়  চলতি বছরের ডিসেম্বরে চতুর্থ সমাবর্তনের আয়োজন করার পরিকল্পনা নিয়েছি।”