মাগুরায় সিন্ডিকেট করে ধান কেনার অভিযোগ

মাগুরায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে ধান কেনার অভিযোগ তুলে চাষিরা ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2020, 02:55 PM
Updated : 7 Jan 2020, 03:48 PM

সরকার গত ২০ নভেম্বর সরাদেশে লাটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে আমন ধান কেনা শুরুর কথা বললেও মাগুরায় শুরু হয় তার দেড় মাস পর মঙ্গলবার সকালে।

সকালে জেলা শহরের ভায়না খাদ্যগুদামে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আফাজ উদ্দিন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেন।

সদর উপজেলার মঘি এলাকার কৃষক আমিরুল ইসলাম ও কবির শেখ অভিযোগ করেন, দেড় মাস পরে ধান কেনা শুরু হওয়ায় এখন প্রান্তিক কৃষকের ঘরে ধান নেই। সরকার এক হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ধান কিনলেও অধিকাংশ কৃষক ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৫০০ টাকা মণ দরে সব ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

আমিরুল বলেন, “জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উল হকের অসততা ও দায়িত্বহীনতার কারণে মাগুরায় সরকার ঘোষিত সময়ের দেড় মাস পর ধান কেনা শুরু হয়েছে, যখন সাধারণ কৃষকের ঘরে কোনো ধান নেই।

“এ কারণে লটারিতে বিক্রেতা হিসেবে নাম উঠলেও ঘরে ধান না থাকায় অনেক কৃষক তা সরকারি গুদামে সরবরাহ করতে পারছেন না। সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে ধান কেনার জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ জেলায় বিলম্বে ধান কেনা শুরু করেছেন।”

তাছাড়া খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উল ইসলাম নিয়মিত অফিসে থাকেন না বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।

সদর উপজেলার মঘি এলাকার কৃষক কবির শেখ বলেন, “আমরা অনেক দিন অফিসে গিয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উল ইসলামকে পাইনি। জেনেছি তিনি স্থায়ীভাবে খুলনায় বসবাস করেন। সপ্তাহে এক-দুই দিন সেখান থেকে এসে মাগুরায় অফিস করেন।”

গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত চার দিন খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উল ইসলামের অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

তিনি ছুটিতে আছেন কিনা জানতে চাইলে সে সময় তার অফিসের কর্মচারীরা বলেন, “স্যার খুলনায় মিটিংয়ে আছেন।”

সিন্ডিকেট ও নিয়মিত অফিসে না আসার বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না।”

তবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ধান সংগ্র করা হবে বলে তিনি জানান।

অভিযোগ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম বলেন, “খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অসততা বা সংগ্রহ অভিযান বিলম্বের যে অভিযোগ উঠছে, তা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ জেলায় এক হাজার ৪০ টাকা মণ দরে সাত হাজার ২৮১ জন কৃষকের কাছ থেকে মোট ছয় হাজার ৭০৭ মেট্রিকটন আমন ধান কেনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সুফিয়ান।