বান্দরবানের জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দাবি

অব্যাহত চাঁদাবাজি ও হুমকিসহ নানাভাবে হয়রানি থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

বান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2020, 03:17 PM
Updated : 5 Jan 2020, 03:17 PM

রোববার বান্দরবান জেলা পরিষদ সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই আবেদন জানান।

লিখিত বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের উদ্যোগ ও আন্তরিকতার ফসল পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদনের পর দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের পরিবেশ অনেকাংশে স্থিতিশীল ছিল।

“সম্প্রতি কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে সম্প্রীতির পাহাড়ে অশান্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছে।”

সরকারি দলের নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসীদের টার্গেট হচ্ছেন জানিয়ে ক্যশৈহ্লা বলেন, “সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে জনবসতিতে ঢুকে গ্রামবাসী ও সরকারপন্থী নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়ার কারণে তারা ঘরছাড়া হয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।”

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “পাড়াবাসী ও পাড়াপ্রধান কারবারীরা আমার কাছে অভিযোগ করেছেন- পাহাড়ে চার আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল চাঁদা চেয়ে গ্রামবাসীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে গ্রামবাসীরা নির্যাতন, অপহরণ ও গুমের শিকার হচ্ছে।”

চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার জন্য তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক ও মগপার্টিসহ চারটি সংগঠনের নাম বলেন।  

এছাড়া মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান লিবারেশন পার্টির (এএলপি) দলছুট সদস্যরা এলাকায় মগপার্টি নাম ধারণ করে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম চালাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পাইহ্লাঅং মারমার অভিযোগ, গত শুক্রবার রাতেও সংবাদ সম্মেলনে না আসতে তাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

তবে তিনি হুমকি দেওয়া ওই ব্যক্তি বা তিনি কোন সংগঠনের তা প্রকাশ করেননি।

সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যঅংপ্রু মারমা বলেন, গত বছর জুন-জুলাইয়ে তার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। এরপর থেকে এলাকায় অশান্তি বিরাজ করছে।

এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের কাছে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্যশৈহ্লা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের উন্নয়নের কাজে গ্রামেগঞ্জে যেতে হবে। ভয়ে কেউ এলাকায় যেতে পারছেন না। সন্ত্রাসীদের হাতে তারা এক ধরনের জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

এসব ঘটনায় তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বান্দরবান সদর ৩ নম্বর পৌর কাউন্সিলর অজিত কান্তি দাশ ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাজুমং মারমা।

এদিকে যোগাযোগ করা হলে সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ক্যবামং মারমা বলেন, “বর্তমানে জেএসএস-এর কোনো সাংগঠনিক তৎরতাও নেই। রাজনৈতি কার্যক্রম চালাতেও পারছে না। জেএসএসকে জড়িয়ে এমন অভিযোগ করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমা বলেন, “বান্দরবানে আমাদের কর্মী থাকলেও বর্তমানে কোনো তৎপরতা নেই। তাই এটি মিথ্যা অভিযোগ।”