তাজিংডং পাহাড়ে অবৈধ ইটভাটা, ১০ বছর সাজা

দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ করায় একজনকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানাসহ ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2020, 01:08 PM
Updated : 1 Jan 2020, 01:08 PM

বান্দরবানের থানচি উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রাতাপাড়ায় নির্মিত এ ভাটা নির্মাণের দায়ে মঙ্গলবার রাতে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও পরিবেশসংক্রান্ত আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুলাহ আল মামুন এ সাজা দেন।

সাড়ে চার হাজার ফুট উচ্চতার এই পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ এ ভাটা বানানোর দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল কুদ্দুছ বান্দরবান সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান।

পরিবেশসংক্রান্ত এ আদালতের বেঞ্চ সহকারী শামীম হোসেন জানান, তাজিংডং পাহাড়ের পাদদেশে কয়েকজন ইটভাটা নির্মাণ করছেন অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর ও পরিবেশসংক্রান্ত আদালত যৌথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে।

পরে রাতে পরিবেশ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মালিকদের একজনকে ১০ বছরের জেল ও ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক সামিলউল আলম কুরসী।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত অবৈধ ইটভাটাটির এক মালিককে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে।

“তবে ইটভাটা বন্ধে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

থানচির স্থানীয় জনপ্রতিধিরা জানান, থানচি সদর থেকে দুর্গম লিক্রি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই সড়কে ব্যবহারে জন্য প্রাতাপাড়া ঘেঁষে গত বছরের অক্টোবর থেকে একটি ইটভাটার নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

প্রধানত বম জনগোষ্ঠীর আসাব এই প্রাতাপাড়া ওই এলাকার একমাত্র সমতল ভূমি উল্লেখ করে তারা আরও জানান, চাষযোগ্য জমি নষ্ট ও পানির উৎস বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় এলাকাবাসী ইটভাটাটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল।

তারা জানান, এর আগেও পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটাটি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। এছাড়া দুই লাখ টাকাও জরিমানাও করা হয়েছিল।

তবে সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইট প্রস্তুতের কাজ চালানো হচ্ছিল বলে তারা জানান।

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের জেলা কমিটির সভাপতি জুয়ামলিয়াম আমলাই বলেন, এবারও জেল-জরিমানা করা হয়েছে কিন্তু ইট তৈরির কাজও চলছে।

“ইটভাটা বন্ধ করা যায়নি। এতে পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি বনের কাঠও পোড়ানো হচ্ছে “

অবৈধ ইটভাটার নির্মাণ কাজে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কৃষি জমি রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়ে গত বছর ইটভাটা সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা হয়। ইটভাটার লাইসেন্স পেতে ইট প্রস্তুতের মাটির উৎস উল্লেখ করে হলফনামা দাখিলের বাধ্যবধকতা আইনে আনা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদে এর বিল পাশের সময় পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছিলেন,“এই আইন প্রণয়ন হলে কৃষির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ‘টপ সয়েল’ রক্ষাসহ ইটভাটাজনিত পরিবেশ দূষণ কমবে।”

এছাড়া পরিবেশ দূষণ রোধে দেশের বিভিন্ন জেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধের উদ্যোগ নিতে দেখা যায়।