নাটোরে ‘মাইকে ঘোষণা দিয়ে জলাশয়ে লুটপাট’

মাইকে ঘোষণা দিয়ে নাটোরে একটি জলাশয় থেকে মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বাড়িতে লুটপাট ও গাছপালা কেটে নেওয়ারও অভিযোগও করা হয়।

নাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2019, 02:29 PM
Updated : 30 Dec 2019, 02:29 PM

সোমবার সিংড়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পরে সিংড়া ও নওগাঁর আত্রাই থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে।

সিংড়ার ছাতারদীঘি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শামীম হোসেন বাদশার নেতৃত্বে এ হামলা হয় বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ।

তবে শামীম হোসেন বাদশা ওই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানান। 

সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, সিংড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ভুলবাড়িয়া গ্রামে সরকারি একটি ডোবার দখল নিয়ে ওই গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমানের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরোধ চলে আসছিল। ২৬ ডিসেম্বর ওই ডোবায় মাছ ধরা নিয়ে গ্রামের কিছু লোকজনের সঙ্গে ফজলুর রহমানের মারামারির ঘটনা ঘটে।

“এর জের ধরে সোমবার সকালে গ্রামের মসজিদে ডোবা দখলের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে সকাল ১১টার দিকে শতাধিক গ্রামবাসী ওই ডোবার নিয়ন্ত্রণ নিতে যায়। তারা ডোবার ধারের বাড়িতে আগুন লাগায়, গাছপালা কাটে ও জিনিসপত্র নিয়ে আসে। এ সময় বিতর্কিত ওই ডোবা থেকে মাছ মারে তারা।”

খবর পেয়ে সিংড়া থানার পুলিশ ও ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে নওগাঁর আত্রাই থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে বলে ওসি নুর-এ-আলম জানান।

বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে শাহিন হোসেন বলেন, “মাইকিং করে লোক জড়ো করে সকাল ১১টার দিকে ছাতারদীঘি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শামীম হোসেন বাদশা, বাবু মন্ডল, বাবলু ও জামিল হোসেনের নেতৃত্বে শতাধিক লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের ডোবায় চড়াও হয়।”

তিনি বলেন, এ সময় তারা একটি বসত ঘরে আগুন লাগায়। এর আগে ঘরে থাকা শ্যালো মেশিন, জাল-দড়ি ও টিউবয়েল লুট করে। পরে ডোবা থেকে প্রায় এক লাখ টাকার মাছ মেরে নিয়ে যায়।

ঘটনাটি তার বাবা পুলিশের ৯৯৯ নম্বরে জানালে এবং সিংড়া থানাকে জানালে পুলিশ আসে বলে শাহিন জানান।

ফজলুর রহমান বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুলবাড়িয়া মৌজায় নিজ নামীয় সম্পত্তির সঙ্গে ৪০ শতক সরকারি ডোবা সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছেন।

“কিন্তু গ্রামের একটি মহল মসজিদের নামে ডোবাটি দখলে নিয়ে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। তাদের কোনো কাগজপত্র নাই। তারা জোর করে ডোবার দখল নিতে চাচ্ছে।”

এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা শামীম হোসেন বাদশা বলেন, তিনি ঘটনার সময় ছিলেন না। তবে তার গ্রামের দুই থেকে তিনশ লোক মসজিদের পক্ষ নিয়ে সেখানে গিয়েছিল।

“উচ্ছৃঙ্খল কিছু লোক সামান্য কিছু ক্ষতি করতে পারে। তবে তারা ঘরে আগুন দেয়নি। ফজলুর রহমানই আগুন লাগিয়েছে।”

সরকার থেকে বরাদ্দ না নিয়ে তারা কেন ডোবা দখল করতে গেছেন জানতে চাইলে শামীম বলেন, “এ এলাকায় এ রকম হয়।”

তিনি আরও বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর ফজলুর রহমানের ছেলেরা তার সমর্থকদের অমানসিকভাবে মারপিট করেছে। তার জের ধরে এ ঘটনা।