শিশু তুহিন হত্যা: অভিযোগপত্রে বাবা, ৩ চাচা ও চাচাত ভাই আসামি

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শিশু তুহিন মিয়া হত্যা মামলায় তার বাবা, তিন চাচা ও এক চাচার ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2019, 10:31 AM
Updated : 16 March 2020, 05:24 AM

সোমবার দুপুরে আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান। 

গত ১৪ অক্টোবর দিরাই উপজেলার কেজাউড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল বাসিরের ছেলে তুহিন মিয়ার (৫) ঝুলন্ত লাশ মেলে বাড়ির কাছের একটি গাছে। তার পেটে দুটি ছুরি গাঁথা ছিল; কান ও লিঙ্গ কেটে বিচ্ছিন্ন করা ছিল।

এ ঘটনায় তুহিনের মা মনিরা বেগম অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ এ ঘটনায় তুহিনের বাবা আব্দুল বাসির, চাচা জমশেদ আলী, মোছাব্বির আলী, নাছির উদ্দিন ও এক চাচাত ভাইকে গ্রেপ্তার করে (তার বয়স ১৮ বছরের নিচে বলে নাম প্রকাশ করা হলো না)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, “তুহিনের বাবা, তিন চাচা ও এক চাচাত ভাই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।”

তাদের মধ্যে একজনের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ার তার বিরুদ্ধে শিশু আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, “আমার তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পেরেছি- কেজাউড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন মেম্বারের সঙ্গে তুহিনের বাবা ও চাচাদের বিরোধ ছিল। ২০০১ সালে গ্রামে  মুজিব নামে এক ব্যক্তি হত্যা মামলায় তুহিনের বাবা আব্দুল বাসির আসামি ছিলেন।

“এ ঘটনা নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে বিরোধে জড়িয়ে যায় এবং অনেকগুলো মামলা হয়। ২০১৫ সালের দিকে আব্দুল বাসিরের আত্মীয় নীলুফা হত্যা মামলায় আব্দুল বাসিরর প্রতিপক্ষদের আসামি করা হয়।এক পর্যায়ে গ্রামের এক জ্যেষ্ঠ ব্যক্তির উদ্যেগে হত্যা মামলাটি মীমাংসা হয়ে যাচ্ছিল।”

কিন্তু তুহিনের বাবা আশঙ্কা করছিলেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি মিমাংসা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলায় শাস্তি হতে পারে। তাই তিনি প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কৌঁশল হিসেবে সে তার ছেলে তুহিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে জানান পুলিশ সুপার।

পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী- গত ১৪ অক্টোবর রাতে শিশু তুহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে বাড়ির পাশের মসজিদের সামনের রাস্তায় নিয়ে গলাকেটে নৃসংশভাবে হত্যা এবং পেটে ছুরি ঢুকিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে আসামিরা।

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিতে আনোয়ারের আত্মীয় সালাতুল ও সুলেমানের নাম খোদাই করে।

পুলিশ সুপার বলেন, “এ ঘটনায় তুহিনের মা থানায় মামলা করলে নিহতের বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইকে আটক করা হয়। পরে তারা থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যার করা স্বীকার করে এবং আদালতে জবানবান্দিও দেন।